করোনা আক্রান্ত এক পরিবারকে সাহায্য করে, তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সহ ছয় যুবক সামাজিক বয়কটের শিকার।
মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন বিবেকানন্দ ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনা সামনে আসতেই জেলা জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছে।
তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি দলের কেউ। শেষমেষ বিজেপি বিধায়কের দ্রুততার সঙ্গে খাবারের বন্দোবস্ত করলে আহার জোটে ওই হতভাগ্যদের। যদিও তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক খোঁজ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
সোমবার রাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমেত ওই সাত যুবককে গ্রামেই ঢুকতে দিল না গ্রামবাসী। অভুক্ত অবস্থায় পাড়ার একটি ক্লাবে অসহায় অবস্থায় রাত কাটায় ওই সাত যুবক। বর্তমানে ওই সাত যুবক ক্লাবের ঘরেই কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় তৃনমুলের পঞ্চায়েত সহ ছয় যুবকের হাতে খাবার তুলে দিলেন বিজেপির বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তৃণমুলের পঞ্চায়েত সহ ওই ছ জনের অভিযোগ, এদিন দুপুর পর্যন্ত তৃনমুলের তরফে কেউ দেখা করতে যায়নি ওই যুবকদের সাথে। আসেনি স্বাস্থ্য দপ্তর।
এলাকার স্থানীয় প্রবীণ নাগরিক দীপক গাঙ্গুলি আচমকাই বাড়িতে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। তার স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা সাহায্যের জন্য পাড়ার যুবকদের ডেকে আনেন।
যুবকরা প্রবীণ ওই নাগরিককে অটো করে রেল হাসপাতালে নিয়ে যান।সেখানে তার কোভিড-১৯ পরিক্ষার পরে দেখা যায় ওই ভদ্রলোক করোনায় আক্রান্ত। এরপর ওই সাত যুবক জেলা হাসপাতালের আ্যম্বুলেন্স করে দীপক বাবুকে তপসিখাতা কোভিড-১৯ হাসপাতাল নিয়ে যায়।
দীপক বাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করে গ্রামে ফিরে আসেন ওই সাত যুবক। গ্রামে এসে দেখেন গ্রামে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে গ্রামের মানুষ।
এরপর অসহায় ওই সাত যুবক পাড়ার একটি ক্লাবে আশ্রয় নেয়। সোমবার রাতে ওই সাত যুবক অভুক্ত অবস্থায় রাত কাটায়। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য গুড্ডু সিং জানিয়েছেন, তার সাথে ওই পরিবারকে সাহায্য করেছে বিমল চক্রবর্তী, উজ্বল সরকার, যাদব অধিকারী, বাপ্পা সরকার, পরিমল দাস।
গুড্ডু বলেন, রাতে আমাদের স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রামে ঢুকতে বাধা দেন। পরে পাড়ার এই ক্লাবেই এক সঙ্গে রাত কাটাই। রাতে খাবার পাইনি। আজ বিধায়ক এসে খাবার দিয়ে গেছেন। গুড্ডু বলেন আমাদের দলের নেতারা ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কেউ এখানে আসেননি।
আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, আমি খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসি। এই যুবকরা সমাজের আদর্শ। প্রকৃত অর্থেই এরা করোনা যোদ্ধা। সকলে খাবার দিয়েছি। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেছি। সামাজিক বয়কট একটি অপরাধ। মানুষকে সচেতন হতে হবে।
তবে এই যুবকদের খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এখনও পর্যন্ত কেউ এখানে আসেনি। তাঁদেরও কোভিড পরীক্ষা করানো দরকার।
আলিপুরদুয়ার জেলা তৃনমুলের মুখপাত্র তথা প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী জানিয়েছেন বিষয়টা জানিনা।আমি আপনাদের থেকে ঘটনাটি শুনেছি।আমি নিজে গিয়ে ওই যুবকদের সাথে কথা বলবো।