ঠিক দুপুর বারোটায়" নিরন্নের খোঁজে" গাড়িটি দেখলেই মুখে হাসি ফোটে রাস্তার ধারে থালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষুধার্ত মানুষ গুলোর।
রাজ্য সরকারের প্রকল্প "মা ক্যান্টিনে" লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ৫ টাকার ডিম ভাত নয়।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বেসরকারি সংস্থা " নিরন্নের খোঁজে" এর উপর আস্থা রাখছে শহরের দীন দরিদ্র,অভুক্ত মানুষরা।
অসহায়, অনাথ,দীনদরিদ্র মানুষের ঘরে গরম ভাত,ডাল,সবজি পৌঁছে দিচ্ছেন সংস্থার সাত যুবক।
একেবারেই বিনামূল্যে গরিব, অসহায় মানুষদের মুখে অন্ন তুলে দিচ্ছে জেলা শহর আলিপুরদুয়ারের একটি বেসরকারি সংস্থা।
গত একবছর ধরে করোনা মহামারিতে কর্মহীন, অসহায়, মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে এই সংস্থাটি।
প্রতিদিন গড়ে ২০০-২৫০ মানুষদের খাবারের জোগান দিয়ে চলেছে এই সংস্থার সাথে জড়িত কিছু মানুষ।
২০২০ সালে মার্চ মাস থেকেই এই সংস্থার উদ্যোগে অভুক্ত, গরিব, অসহায়, মানুষদের দুপুরের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
ওই সংস্থার আলিপুরদুয়ার জংশনের কার্যালয়ে প্রতিদিন সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় রান্নার তোড়জোড়।
সাত-আট জন যুবক মিলে সকাল থেকে দুপুর বারোটার মধ্যে সমস্ত খাবার রান্না করে ফেলেন।
এরপর" নিরন্নের খোঁজে" নামের একটি গাড়িতে করে সেই যুবকরা পৌছে যান শহরের নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানায়।গত এক বছর ধরে শহরের গরীব, অসহায়, দীনদরিদ্র, মানুষদের কাছে শহরের সেই ঠিকানা এখন পরিচিত৷
আলিপুরদুয়ার জংশনের ছিন্নমস্তা কালী বাড়ি, জংশন রেল ষ্টেশন,শোভাগঞ্জ বাস টার্মিনাস, সুপার মার্কেট চত্বর,প্রতিদিন ঠিক ঘড়ি ধরে পৌঁছে যাচ্ছে "নিরন্নের খোঁজে " নামক গাড়িটি।
সপ্তাহের সাতদিন সাত ধরনের মেনু রয়েছে শহরের অভুক্ত মানুষদের জন্য। ভাত,ডাল, ডিম, মাছ,সবজি, শুক্তো একেক দিন একেক রকমের খাবার থাকছে সকলের জন্য। করোনা মহামারীতে কাজ হারিয়েছেন অগণিত মানুষ। কেউ হারিয়েছে দৈনিক শ্রমিকের কাজ,কারো বন্ধ হয়ে গেছে ফুটপাতের ব্যাবসা।কেউ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ ছেড়ে চলে এসেছেন নিজের জেলায়। কর্মসংস্থান হারিয়ে আজ সকলেই বিপাকে।কখনও এক বেলা আধপেটা খাবার জোটে। আবার কোনদিন নিরন্ন থাকতে হয়, পরিবার নিয়ে।
তবে গত একবছর ধরে কিছু মানুষের এই সমস্যার সমাধান করছে নিরন্নের খোঁজে নামের এই গাড়িটি। এই সংস্থার কর্মী পাপু শা জানান গত এক বছর ধরে আমরা দীনদরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে দুপুরের খাবার দিয়ে আসছি। আগামীকাল থেকে লকডাউন। বর্তমানে ১৫০ মানুষের খাওয়া দেওয়া হচ্ছে।আগামীকাল থেকে এই পরিমান আরও বাড়বে।