ব্রিটিশ আমলের নকশায় পাইন কাঠে দেওয়ালে তৈরি ৯০ বছরের পুরোনো চার্চ শিলিগুড়িতে আজও দাঁড়িয়ে। নিয়ম করে চলে প্রভুর প্রার্থনা। সেই চার্চের নামেই রাস্তার নামও। এক সময়ের জনশূন্য রোড এখন ঘিঞ্জি রোডগুলির অন্যতম।
বড়দিনের আনন্দে মেতে রয়েছে গোটা দেশ। শহরের প্রতিটি চার্চে সেজে উঠছে রঙিন আলোয়। চলছে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কাছে প্রার্থনা । তবে এই শহর শিলিগুড়িতেই রয়েছে প্রায় ৯০ বছরের পুরোনো চার্চ। যেখানে এখনো প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে চলে প্রার্থনা।
ব্রিটিশ আমলে তৈরি নকশায় তৈরি এই চার্চের দেওয়াল আজও ইটের বদলে রয়েগিয়েছে পাইন কাঠের। তাই শিলিগুড়ির এই বহু পুরোনো চার্চ এখন দিন গুনছে শতবর্ষের পদার্পণের।
আজকের ভিড়ে ঠাসা শিলিগুড়ি শহরের তখন জনপদ ছিল প্রায় ফাঁকা। শহরের জনসংখ্যা ছিল মাত্র কয়েকশো। এই সময় শিলিগুড়িতে গড়ে ওঠে শহরের চার্চ রোডের চার্চ।
জানা গিয়েছে সেই সময় শহরের বিশিষ্ট মাওয়ার্ড পরিবারের দেওয়া জায়গায় এই চার্চ গড়ে ওঠে। বর্তমানে এর বয়স প্রায় ৯০ পার করলেও আজও সেই সময়ের নকশায় তৈরি পাইন কাঠের দেওয়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে চার্চ।
তবে বর্তমানে শহরের জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে এখন শহরে বেশ কয়েকটি চার্চ রয়েছে। তবে এর মধ্যে অন্যতম পুরোনো চার্চ হল এটি। এখনও প্রতি রবিবার করে নিয়মিত প্রার্থনা করতে আসেন খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা।
শুধু তাই নয় বড়দিনেও সকাল থেকে এই চার্চে চলে প্রভুর কাছে প্রার্থনা ও নানা অনুষ্ঠান । তবে এতো পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও আজও একই রকম ভাবে রয়েছে চার্চের সমস্ত কিছু।
অন্যদিকে চার্চ গড়ে ওঠার পর থেকে যে পরিবার এর পরিচর্চা করতো সেই পরিবারের সদস্যরা আজও এর পরিচর্যা করে চলেছেন। চার্চের প্রাক্তন সম্পাদক অ্যাঞ্জেলিনা হেনরি বলেন, শহরের বহু পুরোনো চার্চ এটি।
তাঁর দাদু এই চার্চের ফাদার ছিলেন। আমার জন্ম এবং শৈশব এখানেই কেটেছে। চার্চের এই ভবন ব্রিটিশ কালে তৈরি। চার্চের বাইরে একটি বড় ঘন্টা ঘর ছিল । প্রার্থনার সময় সেই ঘন্টা বাজানো হত।
চার্চের বর্তমান সম্পাদক মারভিন হেনরি বলেন, বর্তমানে এই চার্চ প্রায় ৯০ এর কাছাকাছি পুরোনো। সেই সময় পাইন কাঠ দিয়ে কালিম্পংয়ের এক বাসিন্দা এর নির্মাণ করেছিলেন। এর ভবনের চারপাশে ও উপরে কাঠ রয়েছে। তার ওপর দিয়ে টিন দেওয়া রয়েছে। এটি শিলিগুড়ির অন্যতম পুরোনো চার্চ।
শিলিগুড়ির প্রবীণ নাগরিক গৌরীশংকর ভট্টাচার্য বলেন, শিলিগুড়ি শহরের এটি সব চেয়ে প্রাচীনতম এবং পুরোনো চার্চ। আজ থেকে ৫০ বছর আগে আমার এক বন্ধুর সাথে সেখানে প্রথম গিয়েছিলাম।
সেই সময় থেকেই খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা এখানে প্রার্থনা করেন। এখনও নিয়ম করে এখানে প্রার্থনা ও যিশুর ভজন করা হয়। তবে এই চার্চকে হেরিটেজের তালিকা ভুক্ত করে বাঁচিয়ে রাখতে হবে আমাদের। কারণ এটা শহরের গর্ব।