North Bengal Snowfall Darjeeling Sikkim: এপ্রিল ফুল নয়, পর্যটকদের এপ্রিল সারপ্রাইজ এনে দিল দার্জিলিং পাহাড়। ৩১ মার্চ রাত বাড়তেই সান্দাকফুতে তুষারপাত শুরু হয়। ঘন্টাখানেকের মধ্যে কয়েক কিলোমিটার এলাকা পুরু বরফে ঢেকে যায়।
এর আগে মার্চ মাসে অনেকবার তুষারপাত হলেও এপ্রিল মাসে কবে তুষারপাত হয়েছে অনেকেই মনে করতে পারছেন না। তবে যাই হোক খুশির আমেজ পাহাড়জুড়ে।
একই সঙ্গে তুষারপাত হচ্ছে সিকিমের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও। ছাঙ্গু-বাবা মন্দির যাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১৫ মাইলের পর পর্যটকদের আর যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
শুধু সান্দাকফু বা পাহাড় নয়, দুদিন বিরতি দিয়ে ফের মেঘলা আকাশ আর হিমেল হাওয়া ফিরেছে সমতলেও। হিহি কাঁপুনি দিয়ে বাতাস বইছে পাহাড় লাগোয়া শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে সহ সংলগ্ন এলাকায়।
এমন অকাল আর ঘনঘন তুষারপাত আগে দেখেননি পাহাড়বাসী বলে জানাচ্ছেন খোদ তাঁরাই। এবার গরমে যাঁরা কোথায় যাবেন ভাবছেন তাঁদের জন্য সেরা ঠিকানা হয়ে উঠচে পারে সান্দাকফু।
মার্চের প্রায় গোটা মাস জুড়েই দফায় দফায় তুষারপাত হয়েছে সিকিম ও দার্জিলিংয়ে। এপ্রিলের প্রথম দিনও তা অব্যাহত। যা ক্রমশ অবিশ্বাস্য হয়ে উঠছে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কাছে।
দার্জিলিং থেকে কিছুটা উঁচুতে সান্দাকফু। এই সময় সাধারণত তুষারপাত হয় না এখানে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসের মধ্যেই সর্বাধিক তুষারপাত হয়। তবে কখনও কখনও হঠাৎ মার্চের শুরুতে তুষারপাত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। তা বলে এপ্রিল মাসে? মনে করতে পারছেন না কেউই।
এই সময় ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভরা বসন্ত। এ সময় সান্দাকফু বা আশপাশে ফি বছর অর্কিড, রডোডেনড্রনে ছেয়ে যায়। রঙিন ফুল, প্রজাপতি আর পাখির টানে ছুটে আসেন মানুষ। কিন্তু এবার উলটপুরাণ।
সাধারণত এ সময় সান্দাকফুতে খুব একটা পর্যটকরা যান না। তবে এবারে ব্যাপার অন্য। সান্দাকফুর খানকতক হোটেল উপচে পড়ছে পর্যটকে। প্রতিদিনের এনকোয়ারিতে নাজেহাল হোটেলমালিকরা।
তবে সমতলে আকাশ মেঘলা হলেও, সান্দাকফুতে পরিষ্কারই রয়েছে আকাশ। শনিবার আকাশে ছিল না মেঘ। ফলে ভোর থেকেই মাথা উঁচু করে রয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
কাকভোরে উঠে যাঁরা অপেক্ষা করছিলেন এক ঝলক তাঁর দেখা পাওয়ার জন্য তাঁরা শনিবার চুটিয়ে উপভোগ করেছে তুষারে ঢাকা পাহাড় ও উপরে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘা।
দার্জিলিঙের বিভিন্ন এলাকা, ম্যাল থেকেও ঝকঝকে আকাশে দেখা দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। ফলে খুশি সকলেই। পর্যটনের সঙ্গে যুক্তদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন এটাই শেষ এক দশকে সেরা প্রাকৃতিক মরশুম।
সমতলে এখন আবহাওয়া মন্দ নয়। মেঘলা আকাশ ঝড়-বৃষ্টি চলছে প্রতিরাতেই। তাপমাত্রাও খুব বেশি একটা নেই। তবে আকাশে মেঘ থাকায় কখনও কখনও গুমোট ভাব দেখা দিচ্ছে।
তবে পরমুহূর্তেই কনকনে বাতাসে সেই গুমোট ভাব উধাও। সমতলের শিলিগুড়ি থেকে অবশ্য় বেশ কিছুদিন থেকেই আর কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যাচ্ছে না মেঘের কারণে। তারফলেও দার্জিলিংমুখী হচ্ছেন অনেকে।
মার্চের কাজের চাপ মোটামুটি শেষ। ঝাড়া হাতপায়ে যদি পাহড়ের হাওয়া খেতে ইচ্ছে করে, তাহলে এটাই সেরা সময়। কে বলতে পারে এ মরশুমের মতো সুযোগ এ জীবনে আর নাও পেতে পারেন।
সবচেয়ে বড় কথা, যাদের ঠান্ডা সহ্য হয় না। এ সময় তুষারপাতের সাক্ষী থাকতে পারেন আপনারাও। কারণ যতই বরফ পড়ুক না কেন, আসলে এপ্রিল মাঠে ঠান্ডা তুলনামূলকভাবে কম।