উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে ঘিঞ্জি শহর কোনটা? কাউকে জিজ্ঞাসা করলে এক কথায় শিলিগুড়ির নাম উচ্চারণ করতে কাউকে এক মুহূর্ত ভাবতে হবে না। শিলিগুড়ি শহরের যানজট সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ টোটো। এদের লাগামছাড়া চলাচল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ জমেছে সাধারণ মানুষের। সেই সমস্যার সমাধানেই এবার নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য পরিবহন দফতর।
শিলিগুড়ি পুরনিগমে জরুরি বৈঠক করলেন মেয়র গৌতম দেব। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, ট্রাফিক ডিসিপি-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক। পাশাপাশি রাজ্য পরিবহন দপ্তরের কর্তারা ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
বৈঠকে জানানো হয়েছে, এবার প্রতিটি টোটোর জন্য আলাদা পরিচয়পত্র তৈরি হবে। টোটোর গায়ে লাগানো থাকবে একটি কিউআর কোড, যা স্ক্যান করলেই জানা যাবে কোন রাস্তায় ওই টোটো চলাচল করতে পারবে।
একই সঙ্গে প্রতিটি পৌরসভা ও শহরাঞ্চল থেকে টোটোর রুটম্যাপ প্রস্তুত করে ৩০শে সেপ্টেম্বর-এর মধ্যে পরিবহণ দপ্তরে পাঠাতে হবে। এরপর সেই রুটম্যাপ অনুযায়ী চলাচলের নিয়ম বেঁধে দেওয়া হবে।
মেয়র গৌতম দেব জানান, শিলিগুড়ি পুরনিগম ইতিমধ্যেই পুলিশের সহযোগিতায় ৮৫টি রুটম্যাপ তৈরি করেছে, যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজ্যের পরিবহণ দফতরে জমা দেওয়া হবে। বর্তমানে শিলিগুড়িতে প্রায় ৫ হাজার বৈধ টোটো রয়েছে।
তবে পাশাপাশি বহু অবৈধ টোটোও রাস্তায় নামছে। নতুন নিয়ম চালু হলে শুধুমাত্র বৈধ নথিপত্র থাকা চালকরাই টোটো চালাতে পারবেন।
রাজ্য পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৩০শে সেপ্টেম্বরের পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে টোটো রেজিস্ট্রেশনের জন্য একটি অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হবে। টোটো চালকদের সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করতে হবে।
যারা আবেদন করবেন না, তারা আর টোটো চালাতে পারবেন না। প্রয়োজনে চালকেরা নিকটবর্তী আরটিও অফিসে গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়ায় সাহায্য নিতে পারবেন।
মেয়র এদিন বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “শহরে টোটো নিয়ে যেভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে, তা রুখতে এবার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সময়সীমা বেঁধে দিয়ে, রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করেই আমরা শৃঙ্খলা ফেরাতে চাই।”
রাজ্য জুড়ে একই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে, দীর্ঘদিনের টোটো বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করছে প্রশাসন।