দিনে তীব্র দাবদাহ। উষ্ণ হাওয়া। রাতেও এতটুকু স্বস্তি নেই। গোটা রাজ্যজুড়ে এক ছবি। তীব্র অস্বস্তিতে রাজ্যবাসী। কলকাতাতেও দহনজ্বালা অব্যাহত। মঙ্গলবার রাজ্যের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের ২ ডিগ্রি বেশি। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের ৩ ডিগ্রি উপরে।
বুধবার আরও বাড়ল তাপমাত্রা। এদিন সকালে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের ২ ডিগ্রি বেশি। আগামী দু'দিন তাপমাত্রার পারদ আরও চড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে হাওয়া অফিসের তরফে। সেইসঙ্গে চলতি সপ্তাহে শহর কলকাতার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রিও পার করে যেতে পারে।
বৃষ্টি কবে হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরছে বঙ্গবাসীর মাথায়। আবহাওয়া দফতর কিন্তু খুব একটা সুখের সংবাদ দিল না বঙ্গবাসীকে। জানিয়ে দিল, দক্ষিণবঙ্গে এপ্রিল মাসটা এভাবেই কাটবে হাঁসফাঁস গরমে। চলবে তাপপ্রবাহও। উল্টে অস্বস্তি আরও বাড়বে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, কলকাতার আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকবে। অস্বস্তি বাড়াবে আপেক্ষিক আর্দ্রতা। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঝড়-বৃষ্টির সেরকম কোনও সম্ভাবনা নেই। সেই সঙ্গে মঙ্গলবারের মত বুধবারও দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া এবংদক্ষিণ ২৪ পরগণার বেশকিছু এলাকায় তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে আগামী ২৪ ঘন্টায় উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এ বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় হিমালয় সংলগ্ন পাঁচ জেলা দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। পাশাপাশি শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। শুক্রবার নাগাদ উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলাতেই ঝোড়ো হাওয়া এবং শিলবৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আগামী দু'দিন দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না
এদিকে গরমে নাজেহাল হতে হবে দক্ষিণবঙ্গের মানুষকে। আগামী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়ার কোনও কোনও জায়গায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তবে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাোয়া বয়ে যেতে পারে। বেশিরভাগ জেলায় আগামী দু'দিন দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না।
এদিকে আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিচ্ছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন বাংলাদেশের ওপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ০.৯ কিলোমিটার ওপরে পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূলের কাছে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। তার প্রভাবে নতুন মাস অর্থাৎ মে মাসের শুরুর দিকে পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পশ্চিম বর্ধমানে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।