Malda, Harishchandrapur Migratory Birds: জমির ওপর দেওয়া মশারির জালে আটকে মৃত্যু পরিযায়ী পাখির। আর এই ঘটনায় অসন্তোষ ছড়িয়েছে পাখি-প্রাণীপ্রেমীদের মধ্যে।
ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশচন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের মহুয়া পাড়ায়। এভাবে পাখিদের মৃত্যু হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে বলেও মনে করছে জেলার প্রাণীপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন: কবর থেকে বের করলেন বন্ধুর লাশ, তারপর বাইকে শহর ঘুরলেন যুবক
যদিও এ ব্যাপারে কুল চাষিরা জানিয়েছেন, জাল লাগানো ছাড়া ফল বাঁচানোর কোনও উপায় ছিল না। তবে এমন যে হবে, তা ভাবতে পারেননি সেখানকার কৃষকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহুয়াপাড়া এলাকায় বেশ কিছু চাষি কয়েক বিঘা জমির ওপর কুল চাষ করেছেন। এই কুলচাষের ওপর তাঁদের জীবন-জীবিকা নির্ভর করে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
ফলে ফল যাতে নষ্ট না হয় তার জন্য সব গাছ জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পাখিদের হাত থেকে বা ঝড় বৃষ্টি হলেও ফল নষ্ট হবে না।
আরও পড়ুন: চুল দিয়ে যায় ঝোলা! দুনিয়ার সবথেকে মজবুত চুল ২২ বছরের এই মহিলার
কিন্তু শীতের শেষের দিকে সেখানে ভিড় জমিয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। আর সেখানে ঘটে বিপত্তি। জালে আটকে মৃত্যু হয় অনেকগুলো পরিযায়ী পাখির। এতগুলো পাখির একসঙ্গে মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার পাখি বিশেষজ্ঞ কৃষ্ণ পাসোয়ান বলেন, "এদিন সকালে নজরে আসে ওই এলাকার জমিতে জালে আটকে অনেক গুলো পাখির মৃত্যু হয়েছে। চাষ তো অবশ্যই করবেন চাষিরা। কিন্তু নজর রাখতে হবে সাথে পাখি যাতে না মারা যায়। না হলে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে।"
বন্য ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অধিকর্তা সৌম্যদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, জাল দিয়ে পুকুর ও ফলের গাছ ঢাকা হয়। যাতে প্রচুর পাখি আটকে প্রাণ হারায়। পাখিরা খুবই অল্প সংখ্যক ফল ও মাছ খায়। তাই আমাদের এই সব জাল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরও জানান, জাল (থ্রেড নেট) ব্যবহার করা হল প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস অ্যাক্ট, ১৯৬০-এর ৩ নম্বর ধারার অধীনে জারি করা একটি পরামর্শের লঙ্ঘন। রাজ্যে বিদেশী এবং পরিযায়ী প্রজাতির পাখিদের সুরক্ষার জন্য জাল ক্ষতিকারক, তা প্রমাণিত হয়। বেশিরভাগ কৃষক নাইলন থ্রেড ব্যবহার করেন, যা অনুমোদিত নয়। কারণ পাখি এতে আটকে যায়। যার ফলে তাদের মৃত্যু হয়। কৃষকদের কেবল সেই সুতো ব্যবহার করা উচিত যা পাখির জন্য ক্ষতিকারক নয়। তবে সমস্যা হল এই জালগুলি খুব ব্যয়বহুল। এর পাশাপাশি ঠিক রঙের জাল ব্যবহার করা উচিত। যা পাখি দেখতে পায় এবং আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
কুল চাষী নাজিমা বিবি দাবি করেন, এই চাষের ওপর নির্ভর করে তাঁদের জীবিকা। জাল না লাগালে ফল নষ্ট হয়ে যাবে। তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা ভাবতে পারেনি এ ভাবে জালে আটকে পরিযায়ী পাখিদের মৃত্যু হবে।