মহাকুম্ভের শাহি স্নান ১২ বছর অন্তর হয়। দেশের চারটি প্রধান নদীর তীরে কুম্ভের আসর বসে। অতিমারীর জন্য এবছর কুম্ভমেলা সাড়ে তিনমাসের বদলে ৩০ দিন ধরে চলবে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে কুম্ভ মেলা। এবারের কুম্ভমেলায় ১২, ১৪, ২৭ এপ্রিলে ৩টি শাহি স্নানের যোগ রয়েছে।
কুম্ভ মেলার তৃতীয় দিনেও শাহি স্নানে দেখা মিলল আতকে ওঠার মতো দৃশ্য। এদিনও কোভিড বিধিকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে পুণ্য স্নানে সামিল হয়েছেন পুণ্যার্থীরা। লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতে অতিমারী নিয়ে কোনও তোয়াক্কাই করতে দেখা গেল না কাউকেই। এক জায়গায় এত মানুষের জমায়েত নিয়ে রীতিমতো চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। কারণ গঙ্গার ঘাটে চরম ভিড়ের মধ্যেও কারও মুখেই নেই মাস্ক।
গত পাঁচদিনে মেলা প্রাঙ্গনে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অন্তত ১,৭০১ জনের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েছে। আরটি-পিসিআর টেস্ট এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেন উভয়ের পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী এই আক্রান্তদের শনাক্ত করা গেছে।
করোনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ের আতঙ্কে রয়েছে এই মুহূর্তে গোটা দেশ। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে, ভারতে প্রতিদিনের ১ লক্ষেরও বেশি করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। বৃহস্পতিবার, দেশে কোভিড ১৯-এ কেস ২,০০,৭৩৯ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে।
হরিদ্বারের চিফ মেডিকেল অফিসার শম্ভু কুমার ঝা বলেছেন, "আরও আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্টের আসা বাকী। পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে কুম্ভ মেলায় ক্ষেত্রের সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা ২ হাজারে পৌঁছাবে।"
উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার, তেহরি গড়ওয়াল এবং দেরাদুন জেলার বিভিন্ন অংশ মিলিয়ে প্রা ৬৭০ হেক্টর জমি জুড়ে বিস্তৃত কুম্ভ মেলা অঞ্চল।
১২ এবং ১৪ এপ্রিলের শাহী স্নানের লগ্নে প্রায় ৪৮.৫১ লক্ষ এখানে স্নান ভিড় জমিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই কোভিড নিয়মাবলীগুলি মেনে চলেননি। না ছিল কারও মুখে মাস্ক, না তাঁরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন।
কুম্ভ মেলা এইরূপ পরিস্থিতির কথা ভেবে বিশেষজ্ঞরা আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন যে এত মানুষের সমাগম অতিমারী পরিস্থিতিতে অত্যন্ত বিপজ্জনক । এতে বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে মারাত্মক ঝুঁকি ঢেকে আনতে পারে।