তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। যার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা নিজেও এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কেন মমতার প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কমিশন?
নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যে নির্দেশিকা দিয়েছে সেখানে উল্লেখ, প্রচারসভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও ও সংখ্যালঘু ভোট ভাগ নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো যে মন্তব্য করেছিলেন তার জবাব চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। তার উত্তর দেন মমতা। তবে সেই উত্তর সন্তোষজনক নয় বলে মনে করছে কমিশন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে নিন্দাজনক বলে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। সেখানে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্যের জেরে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। যা মোটেও কাম্য নয়।
আরও পড়ুন: মমতার ভোট-প্রচারে ২৪ ঘণ্টা ব্যান! হিন্দু-মুসলিম মন্তব্যে EC-র পদক্ষেপ
কমিশনের পাঠানো ৫ পাতার চিঠির সারমর্ম
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো ৫ পাতার চিঠির ছত্রে ছত্রে মমতাকে সতর্ক করে দিয়েছে কমিশন। জানিয়েছে, নির্বাচনী আচরণ বিধি চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সংখ্যালঘু ভোট ভাগ নিয়ে মমতার এই ধরনের মন্তব্য কোনওভাবেই কাঙ্খিত নয়। তাতে বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। কমিশন নির্দেশিকায় আরও জানিয়েছে, মমতার কাছে যে উত্তরগুলি চাওয়া হয়েছিল তার সব উত্তর তিনি দেননি। একটা অংশের উত্তর দিয়েছেন মাত্র। বাকি অংশগুলিকে এড়িয়ে গিয়েছেন। কমিশনের মতে, অথচ উত্তর না দেওয়া অংশগুলি উদ্বেগজনক ছিল। এগুলো হিংসাকে প্ররোচিত করতে পারে। তার সমস্ত সম্ভাবনা রয়েছে। কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে মমতা জানিয়েছিলেন, তিনি ঘেরাও বলতে রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঘেরাওয়ের কথা বলেছিলেন। তাঁর অন্য কোনও ইঙ্গিত এর মধ্যে ছিল না।
কমিশন নির্দেশিকায় আরও জানিয়েছে, মমতা বিভিন্ন সভা থেকে বলেছিলেন, বিভিন্ন রাজ্য থেকে গুন্ডা আসছে এখানে। তারা ভোটকে প্রভাবিত করছে। অন্য রাজ্যের পুলিশও ভোটারদের প্রভাবিত করছে। এই সম্পর্কেও তৃণমূল সুপ্রিমোর কাছে জানতে চেয়েছিল কমিশন। কিন্তু, তারও উত্তর দেননি মমতা।
কমিশন আরও জানতে চেয়েছিল, মমতা জায়গায় জায়গায় বলছেন তিনি জানেন কোথা থেকে গুন্ডামির নির্দেশ আসছে। গ্রামে গ্রামে মারধর করা হচ্ছে। এই নিয়েও কমিশন জবাব চেয়েছিল। তবে তারও কোনও উত্তর তারা মমতার কাছ থেকে পায়নি বলে জানিয়েছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ তারিখ একটি সভা থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার নিদান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে মমতার বিরুদ্ধে। তারপর দিন মমতাকে নোটিশ পাঠায় কমিশন। ১০ তারিখে তার উত্তর দেন মমতা। সেই উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়েই মমতার বিরুদ্ধে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন।