Jail Tourism: পর্যটনের জন্য নানা রকম জায়গার কথা শুনেছেন। পাহাড় থেকে জঙ্গল, সুগম থেকে দুর্গম এলাকা। প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে সাধারণ মানুষ যেতে পারে না সেই রকম আফ্রিকা বা আমাজনের জঙ্গলেও কেউ কেউ ঘুরতে যায় প্রাণ হাতে করে। তবে কোনওটাই এখন আর অস্বাভাবিক নয়। আকাশে বেলুনে ভ্রমণ হোক কিংবা জলের নীচে স্কুবা ডাইভিং এগুলোও জলভাত। কিন্তু তা বলে জেলে রাত কাটানোর পর্যটন? কস্মিন কালেও কেউ ভাবতে পেরেছে? যেখানে জেল তো দূর সাধারণ থানার লক-আপে থাকতে হওয়ার কথা ভাবলেই শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়, সেখানে পয়সা দিয়ে থাকা? যতই আপনার-আমার কাছে এটা অবাস্তব মনে হোক না কেন, এমন পর্যটন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাও আবার খোদ আমাদের দেশ ভারতেই। আসুন জেনে নিই অবাক করা এই পর্যটনের খুঁটিনাটি।
আরও পড়ুনঃ অক্টোবরে বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ, কোন কোন রাশির জাতকদের উত্থান ও পতন?
উত্তরাখন্ডের হলদোয়ানি জেলে কাটাতে পারবেন রাত
ভারতের উত্তরাখণ্ড সরকারের কুমায়ুনের হলদোয়ানি জেলে শুরু হচ্ছে বিশেষ জেল ট্যুরিজম। এর মাধ্যমে পর্যটকরা জেলজীবনের স্বাদ ভোগ করতে পারবেন। একদিনের জন্য খরচ পড়বে মাত্র ৫০০ টাকা। পর্যটনকে আরও ব্যাপক এবং ইন্টেনসিভ করতে চাইছে তারা। নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের উত্তরাখণ্ড সরকার।
কীভাবে কাটাবেন বন্দিরাত
১. ৫০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে জেলে।
২. জেলে ঢোকার সময় পর্যটকদের দেওয়া হবে বন্দিদের পোশাক। সেই পোশাক পরা বাধ্যতামূলক।
৩. জেলে ঢোকার সময় নিজের সমস্ত কিছু মোবাইল-টাকা পয়সা লকারে রেখে যেতে হবে। এটি আবার আপনার স্বেচ্ছাবন্দির মেয়াদ শেষ করে ফেরত আসার সময় পাবেন।
৪, এবার জেলে প্রবেশ করতেই দেওয়া হবে থালা, কম্বল সহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
৫. এবার আপনাকে ছোট কুঠুরিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। আলো-বাতাস খুব কম ঢোকে এমন ঘরে।
৬. কারাবন্দিরা যেমন খাবার খান, পর্যটকদেরও তা-ই দেওয়া হবে। সেলেই শৌচকর্ম করতে হবে।
তবে কেউ যদি কয়েক ঘণ্টা থাকার পরই হাঁপিয়ে ওঠেন, তবে তিনি বেরিয়েও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে জমা টাকা ফেরত তো পাবেনই না, বরং আরও ৫০০ টাকা জরিমান দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ দিনভর পুজো দেখে ক্লান্ত! এই সব খান আর চাঙ্গা হয়ে যান
যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডেও একদিনের জন্য এভাবে কারাবন্দিদের জীবন-যাপনের সুযোগ রয়েছে। পর্যটনের এমন অভিনব পন্থা ভারতে অবশ্য নতুন। ১৯০৩ সালে নির্মাণ হওয়া হলদোয়ানি জেলখানার একটি অস্ত্রাগারও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
মানুষের মধ্যে জেলবন্দি ও জেলের অভ্যন্তরের খুঁটিনাটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এই পদ্ধতিতে কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা না করেই হাতে গরম অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে কোনও কোনও জ্যোতিষী গ্রহের দোষ কাটাতে জেলের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তাঁদের মধ্যে এমনভাবে জেলে রাত কাটানোর প্রবণতা বাড়ছে। সব মিলিয়ে জমজমাট জেল টুরিজম। তাহলে আপনিও একরাত্রি কাটিয়ে আসবেন নাকি?