Advertisement

বাংলাদেশ

ঠিক ৫০ বছর আগে ব্রিগেড কেঁপেছিল "জয় ভারত ,জয় বাংলা"য়, আজও অমলিন ইন্দিরা-মুজিবুরের যুগলবন্দির রেকর্ড

সুমনা সরকার
  • 06 Feb 2021,
  • Updated 9:48 PM IST
  • 1/16

স্বাধীনতার ৪৯ বছর অতিক্রম করে ৫০-এ পা দিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতা যুদ্ধের নায়ক শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষও চলছে এখন। তার মধ্যেই শুরু হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। 

  • 2/16

২০২০-র ১৭ মার্চ মুজিবের জন্মদিন থেকে এক বছর, ২০২১-এর ১৬ মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিব বর্ষ’ পালনের পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু করোনা অতিমারিতে কিছুই সে ভাবে করা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার  ‘মুজিব বর্ষ’-এর মেয়াদ আরও ৯ মাস বাড়িয়েছে। অর্থাৎ ২০২১-এর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকবে এই স্মারক বর্ষ।

  • 3/16

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান ছিল ভারতেরও। ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে সর্বাত্মক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন সেকথা উদাত্ত কন্ঠে স্বীকার করতেন বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমান।

  • 4/16

 বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ব্রিগেড-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন বাংলাদেশের বয়স মাত্র দেড় মাস। স্বাধীন বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম বিদেশ সফর  হিসাবে ভারতকেই বেছে নিয়েছিলেন  শেখ মুজিবুর রহমান। 
 

  • 5/16

আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি  কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে রচিত হয়েছিল ইতিহাস। সেদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য  ব্রিগেডে উপচে পড়েছিল ভিড়। নতুন দেশ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতার বাণী বহন করে এনেছিলেন  বঙ্গবন্ধু।
 

  • 6/16

ইন্দিরা এবং শেখ মুজিবর রহমান। মারাত্মক দুই জন প্রতিনিধি। ভিড় আছড়ে পড়েছিল কলকাতার মাঠে। যতদূর দেখা যাচ্ছিল শুধুই জনসমুদ্র। কালো কালো মানুষের মাথা। জনসমুদ্রের আয়তনের রেকর্ড আজ পর্যন্ত অক্ষুন্ন আছে। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ হাজির হয়েছিলেন সেদিনের জনসভায়।
 

  • 7/16

প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী গরদের শাড়ি পড়ে উঠেছিলেন ভাষণ দিতে। তাঁর ভাষণের কিছুটা বাংলায় করেছিলেন সেদিন। বলেছিলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, শেখ মুজিবর রহমান জিন্দাবাদ,ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী জিন্দাবাদ।” আসলে ইন্দিরা গান্ধীর শিক্ষা জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তৎকালীন বাংলার সংস্কৃতি, শান্তিনিকেতন এবং বাংলা ভাষা।

  • 8/16

আকাশবাণী ও দূরদর্শণ থেকে বঙ্গবন্ধু–ইন্দিরার জনসভার ধারাবিবরণীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও পঙ্কজ সাহাকে। ধারাভাষ্যকার ও গনমাধ্যমব্যক্তিত্ব পঙ্কজ সাহা এক সাক্ষাৎকারের সেদিনের সেই জনসভার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণের শুরুতেই রবীন্দ্রনাথের একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিলেন। তারপর জনতার সে বিশাল স্রোতের মধ্যে থেকে একটু পরপর আরো কবিতা পড়ার অনুরোধ করা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধুকে। শেখ মুজিব জনতার সে অনুরোধে একের পর এক রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে কিছু কিছু অংশ পাঠ করে শোনাচ্ছিলেন। আমরা সবাই আশ্চর্য হয়ে শেখ মুজিবের রবীন্দ্র কবিতাপ্রীতি দেখে বিস্মিত হচ্ছিলাম।”
 

  • 9/16

জানা যায় ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারিতেই বঙ্গবন্ধুর আসার কথা ছিল কলকাতায়। প্রাথমিকভাবে কথা ছিল দিল্লী থেকে ঢাকা আসার পথে কলকাতায় আরেকবার যাত্রা বিরতি করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন মুজিবুর রহমান। কলকাতার দমদম বিমান বন্দরসহ অন্যান্য প্রটোকলও প্রস্তত রাখাই ছিল। কিন্তু আকাশপথ থেকেই তিনি বার্তা দিয়ে দেন  আগে দেশে ফিরবেন। সেদিন হয়নি। ফিরে আসেন ৬ ফেব্রুয়ারি। ইন্দিরা গান্ধীর অনুরোধে। 
 

  • 10/16

ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের সেই ঐতিহাসিক সভায় জনসম্বর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধু  বলেছিলেন, 'ভারতের ঋণ বাংলাদেশ কোনদিন শোধ করতে পারবে না।’সেদিনটা ছিল রবিবার।  সকালে দমদম বিমানবন্দরে প্রথমে এসে নামেন ইন্দিরা গাঁধী, তার কিছু ক্ষণ পরেই শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী । রাজভবন পৌঁছনোর আগে দু’জনে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে। বঙ্গবন্ধুর দু’দিনের সংক্ষিপ্ত কিন্তু আবেগদীপ্ত সফরের আসল মুহূর্তটি অপেক্ষা করছিল বিকেলে ব্রিগেডের সভায়। ছুটির দিন, সকালে বৃষ্টিও হয়েছিল। তবু সেদিন ব্রিগেডে  দেখেছিল লাখো মানুষের জনসমুদ্র, বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গাঁধীকে দেখার ও শোনার আশায় উদ্বেল বাঙালির আবেগের বাঁধ না-মানা স্রোত। তাঁদের বক্তৃতার জন্য উঁচু করে বাঁধা হয়েছিল মঞ্চ, যাতে দূর থেকেও দেখা যায়। একটু দূরে আরও একটা মঞ্চ, সেখানে বৃন্দকণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান গাইছিলেন গায়ক-গায়িকারা।

  • 11/16

‘...আমার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের জন্য আমি সাত কোটি বাঙালির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার বাণী বহন করে নিয়ে এসেছি, কৃতজ্ঞতার বাণী বহন করে নিয়ে এসেছি...’— ব্রিগেডে ৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা কেবল এক সদ্য-স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ভাষণ মাত্র ছিল না, ছিল দুই দেশের, দুই বাংলার ভালবাসা ও সৌভ্রাত্বের  প্রতিষ্ঠা প্রয়াসও। ‘যে জাতি মুক্তিপাগল, যে জাতি স্বাধীনতাকে ভালবাসে, সে জাতিকে বন্দুক কামান দিয়ে দাবাইয়া রাখা যায় না’— বঙ্গবন্ধুর মুখে এ কথা শুনে উদ্বেলিত হয়েছিল কলকাতা। বার বার উচ্চারণ করেছেন রবীন্দ্র-উদ্ধৃতি, কখনও কৃতজ্ঞতা বোধে, কখনও স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গড়ার পথে যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষুদ্রতা, কূটনৈতিক ষড়যন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতায়। তাঁর আবেগী সম্ভাষণে সে দিন উঠে এসেছিল তিতুমির থেকে মাস্টারদা সূর্য সেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে হাসান শহিদ সুরাবর্দির কথা, বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতাস্পৃহা যাঁদের উত্তরাধিকার।

  • 12/16

তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণেও সেদিন ছিল  স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার, নতুন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অগ্রগমনে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। তারই প্রমাণ বঙ্গবন্ধুর এই সফরে কলকাতার রাজভবনে ইন্দিরা-মুজিব বৈঠক, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন, শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন ও বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত। সেনা প্রত্যাহারের তারিখ এর আগেই ১৯৭২ সালের ৩০ জুন থেকে ৩১ মার্চে এগিয়ে আসার কথা হয়েছিল, জানুয়ারিতে কারামুক্ত বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তান থেকে লন্ডন-ফেরত দিল্লি হয়ে ঢাকা যাওয়ার সময়। সেনা প্রত্যাহার হয় ১২ মার্চ, আর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ১৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে যান ইন্দিরা গান্ধী। 
 

  • 13/16

২০১৫ সালে ঢাকা সফরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসির ভাষণের রেকর্ড হাসিনাকে উপহার দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 
 

  • 14/16

শনিবার, সেই দিনটির অর্ধ শতক পূর্তি হল । বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ব্রিগেড-সমাবেশ উপলক্ষে ফের ব্রিগেডে আয়োজিত হচ্ছে অনুষ্ঠান। মুজিব-কণ্ঠে সে-দিন শোনা গিয়েছিল, এক ঘা-খাওয়া জাতির ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। আর ২০২১-এর কলকাতায়, ব্রিগেডের মাঠেই শতকণ্ঠে শোনা যাবে সৈয়দ শামসুল হকের কবিতার আবৃত্তি! ‘আমি যে এসেছি জয়বাংলার বজ্রকণ্ঠ থেকে / আমি যে এসেছি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে’!
 

  • 15/16

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ব্রিগেডের মাঠে ইন্দিরা গাঁধীর উপস্থিতিতে গণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে। প্রকাশ্য সমাবেশে সেই প্রথম স্বীকৃতি নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবও বিদেশের মাটিতে প্রথম কলকাতার ব্রিগেডের মাঠ থেকেই শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনার তৌফিক হাসান।

  • 16/16


১৯৭২ সালে ৬ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন তারই ৫০ বছর সম্পন্ন হবে এ বছর। তাই ওই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ৬ ফেব্রুয়ারি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই উপলক্ষে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে  তৃতীয়বারের মতো ‘‌বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব’।


 

Advertisement
Advertisement