পুজোর আর একমাসও বাকি নেই। পুজো আসছে মানেই রূপচর্চা শুরু হয়ে যাওয়ার পালা। মাত্র এই কয়েকদিনের মধ্যে নিজেকে ফিট অ্যান্ড ফাইন করতে হবে। এবছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সবাই বাইরে বের হতে পারবে না। কিন্তু তাও যদি সুযোগ হয় বেরনোর! তাই নিজেকে তৈরি রাখা জরুরি। আর এই বিষয়ে আপনার মোটিভেশন হতে পারেন বিদ্যা সিনহা মিম। বাংলাদেশের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী ৪ মাসে ঝড়িয়ে ফেলেছেন ১০ কেজি ওজন।
গতবছর বাংলাদেশে করোনা লকডাউনে ঘরেই ছিলেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। অনেকের মতো তিনিও ইউটিউব দেখে রান্না করেছেন। সেই সঙ্গে চলেছে পেটপুজো। তা ছাড়া জানুয়ারি মাসে করোনায় আক্রান্তও হয়েছিলেন নায়িকা। তখন শরীরের ইমিউনিটি বাড়ানোর জন্য বেশি করে খেতে হয়েছিল। আর তাতেই ৫৬ কেজি থেকে ওজন দাঁড়ায় ৬৫। যা দেখে ভিরমি খান স্বয়ং মিম। এরপর শুরু হলো জিম আর ডায়েট।
চার মাসে ১০ কেজি কমিয়ে এখন ৫৫–তে মিম। মিম বলছেন, ‘মার্চ মাসে আমি একটা টার্গেট নিয়ে নামি। যে আমি চার মাসে ওজন ঝরিয়ে ঝরঝরে হয়ে যাব। প্রথম দুই মাস আমার খুব কষ্ট হয়েছে। কারণ, আমি এর আগ দিয়ে যা মনে চাচ্ছিল, তাই খাচ্ছিলাম। পরে খাবারের বৈচিত্র্য আর পরিমাণ দুটোই কমে এল। লকডাউনেই শুরু করলাম কঠোর ব্যায়াম।’
মিম আরও জানান, 'ফিট থাকার জন্য একটা টার্গেট করছি, একটা লিন বডি (মেদহীন) বানাব, যেটা আগে হয়নি। সকালবেলা ৫০-৬০ মিনিট কার্ডিও করি… ওয়েট ট্রেলিং করি, এভাবে প্রায় ২ ঘণ্টার মত লাগে।’
প্রতিদিন সকালে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট কার্ডিও করেন মিম। এরপর এক ঘণ্টা চলে ওয়েট ট্রেনিং। শুটিং থাকলে ওয়েট ট্রেনিংটা বাদ দেন। কেবল কার্ডিও করেন। শুটিং বা অন্য কাজ ছিল না। তাই সমস্ত মনোযোগ ছিল ওজন ঝরানোয়।
জিমের সাথে সাথে ডায়েটেও নজর দিয়েছিলেন মিম। জেনে নেওয়া যাক, টোনড ফিগার পেতে তিনবেলা কী খান মিম।
সকালে সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার ভেতর ঘুম থেকে ওঠেন মিমি। উঠেই দুই গ্লাস জল খান। এরপর দুটো ডিম সেদ্ধ আর কফি খেয়ে জিমে যান। শাহরুখের মত তিনিও নাকি ব্ল্যাক কফি খেয়ে দারুণ এনার্জি পান। এরপর জিম থেকে ফিরে একটা ব্রাউন ব্রেড পিনাট বাটারের সঙ্গে মিশিয়ে খান। তিনবেলাই খাওয়ার কিছুক্ষণ পর খান গ্রিন টি। সেখানে আবার একটা লেবু মিশিয়ে নেন। সকাল আর দুপুরের মাঝখানে খিদে পেলে টুকটাক বাদাম খান।
দুপুরে মিমের লাঞ্চ মেনুতে থাকে চিকেন। সেদ্ধ অথবা গ্রিল করা। যাতে তেল খুবই অল্প থাকে, যা না থাকার মতোই। নুনের পরিমাণও কম। তবে যা-ই খান, পরিমাণমতো। মাছ খেলে ২০০ গ্রাম আর মুরগি হলে ১৫০ গ্রাম। বিকেলে এক মগ কফি খান। সঙ্গে থাকে বিস্কুট। তবে সেই বিস্কুট অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত, তেল বা চিনিমুক্ত।
মিম রাতের খাবার সারেন সাতটা থেকে আটটার ভেতর। রাতে সাধারণত মাছ খান মিম। অথবা বিভিন্ন ফল, বাদাম আর সবজি দিয়ে বানানো স্যালাড। মাঝে মাঝে স্বাদ বদলাতে ফল, চিয়া সিড—এ রকম বিভিন্ন জিনিস দিয়ে একটা মেক বানান। সেখানে প্রোটিনও থাকে।
রাত এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটার ভেতর ঘুমিয়ে পড়েন মিম।
মিম মাঝেমধ্যে কেবল গুড ফ্যাট খান। যেমন স্যামন, টুনা মাছের চর্বি, বাদাম—এগুলো। এ ছাড়া ফ্যাটজাতীয় খাবার খান না। চিনি খান না। দুধ খান না। তবে পনির খান। কোনো ফাস্ট ফুড খান না।
মিম নাকি তাঁর ডায়েটে কোন চিটমিল রাখেননি। অভিনেত্রীর জবাব ‘একদিন এই দাওয়াত, আরেক দিন সেই প্রোগ্রাম, পরশু হয়তো আমার নিজেরই উল্টোপাল্টা কিছু একটা খেতে ইচ্ছে করল। তাই আলাদা করে চিটমিল রাখিনি।‘
মিমের প্রিয় খাবার কী? নায়িক বলছেন, ডায়েট করার মজা হলো প্রতিদিন যা খাই, তার বাইরে যেকোনো খাবার খেতেই ভালো লাগে। তাই বিশেষ কোনো প্রিয় খাবার নেই। বাঙালি, চাইনিজ, সুশি—সব পছন্দ। তবে ওজন কমানোর চক্করে আট মাস হলো তিনি নাকি সুশি খাননি!