ওপার বাংলার অভিনেত্রী জয়া আহসান এই বাংলাতেও কম জনপ্রিয় নন। এপারেও চুটিয়ে অভিনয় করেন নায়িকা। তবে বর্তমানে তিনি ব্যস্ত ইরানি পরিচালকের ছবির শ্যুটিং-এর কাজে।
এপ্রিলের প্রথম দিন থেকেই ঢাকায় চলছিল ছবির শ্যুটিং। ছবিটির নাম ‘ফেরেশতে’।
ইরানি নির্মাতা মুর্তজা অতাশ জমজমের গল্প, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এই সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। বাংলাদেশ-ইরানের যৌথ প্রযোজনার এই সিনেমায় আছেন বাংলাদেশের আরও পরিচিত কয়েকজন অভিনেতা।
ইরানি সিনেমার ঢঙেই নির্মিত হচ্ছে এটি। শুটিং থেকে শুরু করে সবকিছুতেই ইরানি সিনেমার প্রভাব। সিনেমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতেই গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সংলগ্ন একটি রেঁস্তোরায় সংবাদমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন জয়া আহসান ও সিনেমার নির্মাতার।
ইরানি নির্মাতার সিনেমা হলেও সিনেমার পুরো গল্পে বাংলাদেশ জুড়েই। সুবিধাবঞ্চিত একটি পরিবারের গল্প উঠে আসবে ‘ফেরেশতে’ সিনেমায়। তবে নেতিবাচকতা নয়- খুব ইতিবাচকভাবেই গল্পে বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
সিনেমাটির জন্য ঢাকার কারওয়ান বাজার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রেলস্টেশন, বসুন্ধরা আবাসিকের মতো জনবহুল এলাকা চষে বেড়িয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসানসহ অন্যান্যরা। ঘুরে বেড়িয়েছেন সাধারণের ভিড়ে। এমনকি পয়লা বৈশাখে গিয়েছেন শাহবাগ এলাকায়।
আর সেই শ্যুটিং-এর কথা বলতে গিয়েই এক মজার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন জয়া। জয়া বলেন,‘পয়লা বৈশাখে হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে শ্যুটিং করেছি, কেউ চিনতে পারেনি। এরকম বেশকিছু মজার অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে। এরমধ্যে আরেকটি ঘটনা হয়েছে কাওরান বাজারে শুটিংয়ের সময়। এতো সাদামাটা পোশাক পরে এদিন শুটিং করেছি যে, মাছের দোকানে যাওয়ার পর দোকানদাররা আমাকে পচা মাছ গছিয়ে দিচ্ছিলো। এক দোকানদারতো ৫০ টাকায় পচা মাছ দিয়ে বলছিলো, ‘নিয়া যান আফা!’
জয়া বলেন, ‘আমি শ্যুটিংয়ের পুরো সময় মেকআপ নিয়ে থাকতাম। আমার চরিত্রটি একেবারের সাদামাটা। বস্তির সাধারণ মানুষের মতো। এতে করে একটা সুবিধে হতো, রাস্তায় অন্যদের সামনে ঘুরে বেড়ালেও কেউ আমাকে চিনতে পারতো না। এমন হয়েছে একসঙ্গে একবার কোথাও যাচ্ছি, ভিক্ষুক এসে আমার দিকে তাকিয়ে পাশের জনের কাছে টাকা চাইলো। বেশ কয়েকবার এটা করলো। একটিবারের জন্যও আমার কাছে চাইলোই না। মানে আমাকে এতটা দরিদ্র দেখাতো!’
আরও একটি ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘পল্টনের স্কুলে শুটিং করছিলাম। সেখানে ইফতারের পর জাকাতের কাপড় ও টাকা দেওয়া হবে। বয়স্ক এক ভদ্রমহিলা কাপড় নিতে এসেছেন। তিনি বারবার কাপড় চাইছিলেন। আমি তাকে বললাম, ‘খালা আপনি থামেন, আপনাকে কাপড় দেবো।’ তিনি আমার দিকে আশ্চর্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার পাশের জনের কাছে চাইতে লাগলেন! আমাকে দেখে আমার কথা তার বিশ্বাসই হয়নি।’’
সিনেমাটি নিয়ে জয়া আহসান বেশ তৃপ্ত মনে কাজ করে যাচ্ছেন। সিনেমাটিকে নিজের ক্যারিয়ারের জন্যও বিশেষ বলে মনে করছেন তিনি। অন্যদিকে, অভিনেত্রীর কাজের প্রশংসা করেন পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম। তার মতে, জয়া বিশ্বমানের অভিনেত্রী। জানা যাচ্ছে ছবিটির শ্যুটিং প্রায় শেষের দিকে।
‘ফেরেশতে’ কোথায় কবে মুক্তি পাবে? এমন প্রশ্নে ইরানি নির্মাতা জানান, প্রথমে সিনেমাটি বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হবে। বিশেষ করে ইরানের নামকরা উৎসব ‘ফজর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ এ দেখানো নির্মাতার প্রধান টার্গেট।