বাংলাদেশের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনির বনানীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব।
পরীমনির বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে র্যাব। মিলেছে মাদকও।
বিশেষ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে নায়িকা পরীমনি ও তার পরিচিত কয়েক জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই অভিযান। তবে পরীমণির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কিছু জানায়নি র্যাব।
বুধবার বিকালে নায়িকার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক খন্দকার আল মঈন জানান, সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে পরীমনির বাড়িতে র্যাব অভিযান পরিচালনা করেছে।
অভিযানের আগে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বাড়ি ঘিরে রাখে, তখনই পরীমনি ফেসবুকে লাইভে আসেন। নিজের ভেরিফায়েড পেজ থেকে লাইভে এসে বাঁচার জন্য পরিচিতজনদের কাছে আকুতি জানান। যদিও সেই সময় তিনি দাবি করেন, পুলিশ পরিচয়ে তার বাসায় অন্য কেউ হামলা চালাচ্ছে।
লাইভে থেকেই তিনি পরিচিত কয়েকজন সংবাদমাধ্যম কর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ফোন করেন। পাশাপাশি তিনি বনানী থানাতেও ফোন করেন। এ সময় নিজেকে বাঁচাতে কান্নাকাটি করেন অভিনেত্রী।
লাইভে তিনি বলেন, আমি মরব আর কেউ কিছু বলবে না? মরতে তো একদিন হবেই। আমি এই লাইভ কাটব না। যতক্ষণ না থানা থেকে পুলিশ আসবে, মিডিয়া আসবে ততক্ষণ লাইভ চলবে। ভাই আপনারা কেউ বুঝতে পারছেন আমার অবস্থা? এইখানে কাছেই থানা। অথচ তারা আসছে না। আমার তো তাদের হেল্প লাগবে। তিনদিন ধরে আমি বিছানা থেকে উঠতে পারছি না। আমার পরিচিতরা কই। একটু আসবেন দেখবেন? এরা কারা? ভাঙচুর করছে। এসব আল্লাহ সহ্য করবে না। আপনারা কত মানুষ এই লাইভ দেখছেন। কেউ কিছু বলছেন না। আমার বাসায় আমার বুড়ো নানা এসেছেন। আপানারা মিডিয়ার কেউ আসবেন? আমি তো মরে যাচ্ছি।
লাইভে দেখা যায়, তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় জানার পরেই দরজা খুলেছেন। ততক্ষণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকলের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে। পাশাপাশি পরীমনির লাইভ বন্ধ করার জন্য বলেন। পরে তিনি লাইভ বন্ধ করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের দুই মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মদ-ইয়াবাসহ নানা মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। দুই মডেল স্বীকার করেছেন, মদ-ইয়াবাসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বিত্তবান লোকেদের ‘আপত্তিকর’ অবস্থার ছবি ও ভিডিও তারা তুলতো। পরে সেই ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েই ব্ল্যাকমেইল করা হতো।
এদিকে পরীমনি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় রয়েছেন। কিছুদিন আগে ঢাকার সাভারের বোটক্লাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অভিযোগ করে আলোচনায় আসেন তিনি।
গত জুন মাসে রাজধানীর একটি ক্লাবে পরীমনিকে হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে ঢাকা বোট ক্লাবের সিইও নাসির ইউ আহমেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। সে অভিযোগও অভিনেত্রী ফেসবুক লাইভে এসে জানান। সে ঘটনায় কয়েকজন গ্রেফতারও হয়েছিলেন, তারা আবার জামিনও পেয়ে গেছেন।
এর পর পরীমনির বিরুদ্ধে গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে। ৭ জুন পরীমনি ও তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন ওই ক্লাবে গিয়ে গ্লাস ভাঙচুর করেন।
এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের কক্সবাজারে শুটিং চলাকালীনপরীমণিকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল।