উত্তরবঙ্গের চা বাগানের সঙ্গে গোটা পৃথিবীর সংযোগ বহু পুরনো। ব্রিটিশ আমল থেকেই ব্রিটিশরা উত্তরবঙ্গের চা গানগুলিতে বাংলো বানিয়ে তাতে থাকতেন। অনেক জায়গায় সেইসব বাংলো থেকে আস্তে আস্তে ব্রিটিশ পাততাড়ি গুটিয়ে চলে গেলেও বাংলোগুলি রয়ে গিয়েছে manager's বাংলো হিসেবে স্বমহিমায়।
অন্যদিকে অনেক জায়গাতে একাধিক বাগানের মধ্যে থাকা সেই বাংলোগুলিকে পর্যটকদের জন্য ওপেন করে দেওয়া হয়েছে। এতে সক্রিয় সহযোগিতা করেছে রাজ্য পর্যটন দপ্তর। বহু বাংলো ৩০০-৪০০ বছর পর্যন্ত পুরনো। যার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বহু রক্ত-জল ঝরা ইতিহাস।
প্রত্যেকটি স্থাপত্য নির্মাণ শৈলী ইউরোপীয় ধাঁচের। ফলে আধুনিক জগতের সঙ্গে খানিকটা বেমানান হলেও তার ঐতিহ্য বরাবরই আকর্ষণ করে পর্যটকদের। তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগানগুলোর বহু জায়গায় এমন বাংলো রয়েছে, এমনই বাংলা ডুয়ার্সের ক্যারন, বাদামতাম, গাটিয়া, কুর্তি, নামরিং শিলিগুড়ির অর্ড-তরাই।
২০২০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ঘোষণা করে পর্যটন প্রকল্প অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজে চা বাগানের মোট ১৫ শতাংশ ব্যবহার করা যাবে। তা সর্বোচ্চ ১৫০ একর পর্যন্ত হতে পারে। অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজের মধ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, উদ্যানপালন, ফুল চাষের কাজ করা যেতে পারে। চায়ের উৎপাদন কমলে অন্য বছরগুলিতে তা সামাল দেওয়া যেতে পারে।
বাগানগুলি নিয়ে পর্যটন দপ্তরের সহায়তায় একটি বইও প্রকাশ করা হয়েছে। তরাই-ডুয়ার্সের চা বাগানগুলির হেরিটেজ বাংলোগুলিকে নিয়ে ‘Burra Bunglows of North Bengal: Glimpses of Built Heritage and Lifestyle of Tea Estate in North Bengal’ নামে একটি বই প্রকাশ করা হয়েছে।বইতে বিভিন্ন চা-বাগানের বাংলোগুলির ছবি, তার আশপাশের দৃশ্য, শুধুমাত্র বইয়ের ছবি দেখে মন জুড়িয়ে যাবে।
সমস্তই বুকিং করতে পারবেন পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে। উত্তরবঙ্গে আসতে হলে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন কিংবা বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে যেতে পারবেন যে কোনও জায়গাতেই। দার্জিলিং, কালিম্পং, গ্যাংটক যারা ঘুরেছেন বা ঘোরেন, তাদের কাছে এই সমস্ত কেন্দ্রগুলি যাওয়া অত্যন্ত সহজ।
ছবি সৌজন্য- গেট বেঙ্গল