বর্ষা এবং সর্দির সময় কাশি-সর্দি-জ্বরে প্রতি মরশুমেই আমরা বিশেষ করে বাচ্চারা খুব ভুগতে থাকে। চিকিৎসকদের বক্তব্য হচ্ছে যে এই মরশুমে আমরা কোনও সাবধানতা অবলম্বন করি না, তাই ভুগি।
ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য আমাদের গরম কাপড় বা ঠাণ্ডা না লাগার জন্য বহিরঙ্গের কিছু পোশাক বা কবচ পড়তেই হবে। সেটা তো আলাদা, কিন্তু ঠান্ডার প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য শরীরকে বাইরে সঙ্গে সঙ্গে ভেতরেও গরম রাখতে হবে। আর এটা হচ্ছে বেশি জরুরি।
পাটনার আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক সুনীল কুমার দুবে ঘরে বসেই টোটকা জানিয়েছেন, তা শুধু ঘরোয়া উপায়ে পালন করলেই সর্দি-কাশি-জ্বর দূরে রাখতে পারবেন। শুধু দূরে রাখাই নয় এই ইমিউনিটি আপনাকে সারা বছর অভ্যন্তরীণ শক্তি দেবে।
সুনীল কুমার দুবে জানিয়েছেন যে ঠান্ডাতে লোকেরা লবঙ্গ, তুলসি, গোলমরিচ এবং আদা থেকে বানানো চা যদি খান, তা কাশি-সর্দিতে মোক্ষম ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
সম্প্রতি বল্সব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পিএইচডির উপাধি সম্মানিত দুবে জানিয়েছেন যে এই সমস্ত রোগের মুখ্য কারণ হচ্ছে ভাইরাসের বাড়তে থাকা প্রভাব।
তিনি জানিয়েছেন যে হাঁচি একটি সংক্রামক রোগ এবং খুব দ্রুত কাজ ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ নাক দিয়ে জল পড়া, শুকনো কাশি বা সর্দি যুক্ত কাশি নিজের সঙ্গে নিয়ে আসে এবং শ্বসনন্ত্রের উপর আচমকা হামলা করে তাকে আক্রান্ত করে দেয়।
তিনি জানিয়েছেন যে কমন কোল্ডে বাচ্চাদের এবং বয়স্কদের বিশেষ নজর রাখতে হবে এবং তাদের জন্য সর্বাধিক সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
সর্দিতে মধু খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত ভাল। এটি শরীরেরকে ভেতরকে থেকে গরম রাখে। আয়ুর্বেদে মধুকে অমৃত বলে মনে করা হয়। সর্দি-কাশি হলে রাতে শোয়ার আগে এক গ্লাস উষ্ণ দুধে এক চামচ মধু মিলিয়ে যদি খেতে পারেন তাহলে এই সমস্যা গোটাটাই শেষ হয়ে যাবে। মধু শরীরের ইউনিয়ন সিস্টেমের রক্ষা করতে হিসেবে কাজ করে।
গোলমরিচ শরীরের জন্য অত্যন্ত ভাল। চা হোক, কিংবা স্যুপ। গোলমরিচকে এই মরশুমে খাবারের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য করে নিতে পারলে শরীর নিজেই ইমিউনিটি তৈরি করবে।
তিনি জানিয়েছেন যে সর্দির সময়ে বাজরার রুটি খেলে তা অত্যন্ত ভালো ফায়দা দেয়। একটি শরীরকে গরম রাখে। সঙ্গে বাজরার রুটিতে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে শরীরের জন্য ভালো। ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য বাচ্চাদেরও বাজার বাজার রুটি খাওয়ানো উচিত।
আমলকি এবং সর্দিতে অত্যন্ত ভালো কাজ করে তিলের তেল মালিশ করলেও আমাদের ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে পারে।
দুবে জানিয়েছেন যে সর্দির সময় মাছ খাওয়া অত্যন্ত কার্যকর। খাবারের সঙ্গে রোজ কিছুটা তৈলাক্ত মাছ রাখলে করলে শরীর গরম হয়। সঙ্গে পাচন ক্রিয়াও খুব ভালো হয়।
তিনি জানিয়েছেন যে, আমলকি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত লোকেদের জন্য কোনও অমৃতের চেয়ে কম নয়। আমলকির প্রাচীন আয়ুর্বেদিক প্রণালীতে বেশ কিছু রকমের রোগের চিকিৎসা করা হয়। প্রায় ৫০০০ বছর থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমলকির তুলনা অমৃতের সঙ্গে করা হয়েছে। আমলকিতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ বি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং ডাইওরেটিক অ্যাসিড থাকে।
তিনি জানিয়েছেন সর্দিতে মুসুম্বি এবং কমলালেবু খাওয়া থেকে বাঁচতে হবে খেজুর কে গরম দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে সর্দি থেকে পরিত্রাণ মেলে।