গাছে কাঁঠাল, গোঁফে তেল –কাঁঠাল নিয়ে এ প্রবাদটি কম বেশি সকলেরই পরিচিত। তবে কাঁঠাল কিন্তু খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার। পাকা ও কাঁচা, কাঁঠাল দুইভাবেই খাওয়া যায়।
কাঁচা অবস্থায় এঁচোর হিসাবে খান বা পাকা অবস্থায় কাঁঠাল- দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। নিরামিষ পদ হিসাবে এঁচোড়ের তরকারি বা মাছ-মাংস দিয়ে রান্না করা এঁচোর দুইটো আমাদের বাঙালিগের কাছে খুবই প্রিয়। এঁচোর আলুর তরকারি, এঁচোরের ডালনা, এঁচোরের কোপ্তাকারি, এঁচোরের কালিয়া, এঁচোরের বিরিয়ানি, চপ, কাটলেট কোনটা রেখে কোনটা বলি। গরম ভাতের সঙ্গে এঁচোরের যেকোনো একটি পদ দিয়ে আপনি এক থালা ভাত খেয়ে নেবেন। মাছ-মাংস লাগবে না।
কিন্তু জানেন কি, এঁচোর বা কাঁচা কাঁঠালের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। শরীরের জন্য কাঁচা কাঁঠাল খুবই উপকারী। এঁচোরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান। এসব উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখে ও পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে। আসুন জেনে নিই কাঁচা কাঁঠাল খাওয়ার উপকারিতাগুলি।
বয়সের ছাপ দূর করে: এঁচোর আপনার বয়স ধরে রাখতে সাহায্য করবে। মুখে বলিরেখা পড়তে বাধা দেয়। এটি ত্বকের জন্য ভালো। এর মধ্যকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ সৃষ্টিকারী মুক্ত উপাদানের (ফ্রি র্যাডিক্যালস) বিরুদ্ধে লড়াই করে। প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম থাকায় হাড়ের ক্ষয় ঠেকাতে পারে কাঁঠাল। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে ও বলিরেখাও কমে।
হজমশক্তি বাড়াতে: পেটের নানা রকম পীড়া থেকে মুক্তি দিতে পারে কাঁচা কাঁঠাল। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং অন্ত্রের সক্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে যে আঁশ থাকে, তা কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। পেটের অম্লতা ও আলসার ঠেকাতে এঁচোর খেতে পারেন। ফাইবারসমৃদ্ধ ফল হওয়ায় হজমশক্তি বাড়ায় এবং পেট পরিষ্কার রাখে।
ওজন কমায়: এতে চর্বির পরিমাণ খুব কম। তাই বেশি খেলেও ওজন বাড়ার শঙ্কা নেই। বরং পেট ভরে রেখে ওজন কমাতে সাহায্য করে কাঁচা কাঁঠাল।
চোখ ভাল রাখে- এঁচোরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন, যা চোখ ভালো রাখে।
হাঁড় শক্ত করে- এঁচোরে ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড় শক্ত রাখে।
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী রাখে- উচ্চমানের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসমৃদ্ধ কাঁচা কাঁঠাল। এতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া ক্যান্সার ও টিউমারের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এতে থাকা সোডিয়াম ও পটাশিয়াম শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সকে ঠিক রাখে, যা উচ্চরক্তচাপ ও হার্টও ভালো রাখে। পাইলস ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়- এঁচোরে প্রায় কোনো কোলস্টেরল নাই বললেই চলে। তাই কাঁচা কাঁঠাল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। যেকোনো বয়সের মানুষ এটা খেতে পারেন। এটি শক্তির ভালো উৎস। এতে আয়রন থাকে, যা রক্তে লোহিতকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। রক্তাল্পতায় রোগীদের জন্য এঁচোর খুবই উপকারী।