মানিব্যাগ কোথায় রাখেন? প্যান্টের পিছনের পকেটে? ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওইভাবেই বসে থাকেন? জানেন কি, নিজের কতবড় সর্বনাশ করছেন? পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।
মানিব্যাগে কি শুধুই থাকে টাকা? না। টাকার পাশাপাশি প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় কাগজ, ভিজিটিং কার্ড, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, মেট্রোর স্মার্টকার্ড, পার্সে থাকে সবই। ফলে, মানিব্যাগ হয়ে যায় ভারী ও মোটাসোটা। পিক পকেটের ঝুঁকি তো থাকেই। সঙ্গে আরও মারাত্মক বিপদ। এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন একটি গবেষণা বলছে, মোটা মানিব্যাগ হিপ পকেটে রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে। পিঠ, ঘাড়, যৌনাঙ্গের পার্শ্ববর্তী অঞ্চল, নিতম্বে খারাপ প্রভাব ফেলে। শিরদাঁড়ায় ক্রমাগত চাপ পড়ার ফলে তা ধীরে ধীরে বেঁকে যেতে পারে। পিঠ ও ঘাড়ে ব্যথা শুরু হয়। স্পাইনাল জয়েন্ট, পেশি ও ডিস্ক মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। পেলভিসের একাধিক নার্ভ অকেজো হতে থাকে। সায়াটিকা নার্ভের ওপর খুব চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন এভাবে চলতে থাকলে সোজা হয়ে বসার ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে। শেষ পরিণতি পক্ষাঘাত।
বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, হিপ পকেটেই কেন রাখতে হবে মানিব্যাগ? প্যান্টের ডান বা বাঁদিকের পকেট কিংবা অফিস ব্যাগে মানিব্যাগ রাখতে বাধা কোথায়? বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই পঙ্গু হয়ে যেতে চান না? তাই সময় থাকতেই সাবধান।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, পিছনের পকেট যেখানে থাকে, ঠিক সেখানেই থাকে সিরোটিক নার্ভ। দীর্ঘ সময় পকেটে মানিব্যাগ রাখায় এবং ওই অবস্থায় চেপে বসে থাকার কারণে সেই নার্ভে ও ওই এলাকার পেশির উপর প্রবল চাপ পড়ে। ফিমার হাড়েও চাপ পড়ে। এতেই কোমরে ব্যথা ও হাড়ের সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই অভ্যাস যত তাড়াতাড়ি ত্যাগ করা যায়, ততই ভালো। কিন্তু এই সমস্যা একবার দেখা দিলে কী করবেন?
প্রথমত এই অভ্যাস ত্যাগ করতেই হবে। কিন্তু একবার যদি কোমরে ব্যথা শুরু হয়ে যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। ব্যথা বাড়লে চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিয়ে, গরম সেঁক নিতে পারেন।
এই অভ্যাস না বদলালে ভবিষ্যতে নানা ধরনের জটিল সমস্যা হতে পারে।
দীর্ঘদিন এই অবস্থা চলতে থাকলে কোমরের ব্যথা বাড়তে থাকে। নার্ভের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এমনকী হাড়ও ক্ষয়ে যেতে পারে।
ছেলেদের নানা হাড়ের সমস্যা এবং পায়ে বা কোমরে বাতের ব্যথার জন্য পিছনের পকেটে রাখা এই মানিব্যাগই দায়ী।