শরীরে অনুভূত প্রতিটি ছোট পরিবর্তন মৃত্যুর ইঙ্গিত দিতে পারে। ডাক্তাররা সতর্ক করেছেন যে প্রতিটি মানুষের জন্য এই লক্ষণগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। যাতে সেগুলো সময়মতো নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
একটি গবেষণার ভিত্তিতে, চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, মৃত্যুর ওয়ার্নিং সাইন মৃত্যুর ১০ বছর আগে উপস্থিত হতে পারে। আপনি হাঁটাচলা থেকে শরীরের নানা গতিবিধির মাধ্যমে এই লক্ষণ চিনতে পারেন।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার বলা হয়েছে, '৬৫ বছরের বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে 'ফিজিক্যাল মোটর ফাংশন' -এর অবনতি মৃত্যুর ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত।'
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন ব্যক্তির চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ানো, হাঁটার গতি বা চলাফেরা, কমজোর গ্রিপ ইত্যাদির মাধ্যমে এই লক্ষণগুলি সনাক্ত করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের চিহ্নিত করলে, এগুলো প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ৩৩ থেকে ৫৫ বছর বয়সি ৬০০০ স্বেচ্ছাসেবীদের উপর এই গবেষণা করা হয় ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে। এর পর ২০০৭ থেকে ২০১৬-র মধ্যে আবার এই ব্যক্তিদের উপর ৩টি আলাদা পর্যায়ে শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। অর্থাৎ গবেষণার রিপোর্ট তৈরি হতে সময় লেগেছে প্রায় ৩৬ বছর।
এর মধ্যে ছিল হাঁটার গতি, চেয়ার থেকে উঠতে সময় নেওয়া, গ্রিপের শক্তি-সহ ড্রেসিং, টয়লেট ব্যবহার, গ্রসারি কেনাকাটা ইত্যাদির মতো সহজ কিছউ টাস্ক ছিল। গবেষণায় ২০১৯ পর্যন্ত হওয়ার মৃত্যুর ঘটনাকেও রেকর্ড করা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ফিজিক্যাল মোটর ফাংশনের মাত্রা হ্রাস পেলে মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে থাকেগবেষণায় বলা হয়েছে, যে সব স্বেচ্ছাসেবীরা ২০১৯ সালের মধ্যে মারা গিয়েছেন, তাদের মৃত্যুর ১০ বছর আগে পর্যন্ত চেয়ার থেকে ওঠার গতি বেঁচে থাকা মানুষের তুলনায় কম ছিল।
শুধু তাই নয়, যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবীরা মারা গেছেন তাঁরা বেঁচে থাকা মানুষের চেয়ে মৃত্যুর চার বছর আগে পর্যন্ত তাদের 'দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কর্মকাণ্ডে' বেশি অসুবিধা অনুভব করতেন। এই শেষ ৪ বছরে মারা যাওয়া স্বেচ্ছাসেবকদের অসুবিধা বাড়তে থাকে।
গবেষকরা দেখেছেন যে স্বেচ্ছাসেবকদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে ২২ শতাংশের মধ্যে ধীর হাঁটার গতি দেখা গিয়েছে। ১৫ শতাংশের ক্ষেত্রে দুর্বল গ্রিপ এবং ১৪ শতাংশের ক্ষেত্রে চেয়ার থেকে ওঠার ধীর গতি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
একই সময়ে, দৈনন্দিন জীবনযাপনের অসুবিধা মৃত্যুর ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে জড়িত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই লক্ষণগুলি সময়ের সঙ্গে আরও গুরুতর হয়ে উঠেছিল।