Tagore Rock Of Ahaldara: কবিগুরুর দার্জিলিং পাহাড় প্রীতি কারও অজানা নয়। বহুবার দার্জিলিং, কালিম্পং এসেছেন। এখানে বসে কবিতা লিখেছেন। মংপুতে তো তাঁর ব্যবহৃত জিনিস নিয়ে সংগ্রহশালা রয়েছে। বোধহয় প্রকৃতিকে গভীরভাবে ভালবাসলে প্রকৃতিও তাকে বোধহয় মনে রেখে দেয়। তার প্রমাণ মিলবে 'টেগর রক'-এ।
প্রকৃতির এ এক বিস্ময়। কার্শিয়াং থেকে কাছে সিটংয়ের অহলদাঁড়ায় শায়িত রবীন্দ্রনাথ 'টেগর রক'। প্রকৃতির খেয়ালে গড়ে ওঠা এই টেগর রক বা স্থানীয়দের ভাষায় রবীন্দ্র পিক। আশ্চর্যের বিষয় কবিগুরুর এই অঞ্চলে বিচরণক্ষেত্রের খুব গাছেই আবিষ্কৃত এই পাহাড় টিলা। এ বিশ্বে কত কিছুই নতুন আবিষ্কার হচ্ছে। আবার অনেক কিছুই অনাবিষ্কৃত থেকে গিয়েছে। এমনই এক নবীন আবিষ্কার কাঞ্চনজঙ্ঘার বুকে নতুন উদ্দীপনা যোগাচ্ছে। আর এই আবিষ্কার বাঙালির কাছে নতুন উন্মাদনা নিয়ে এসেছে। কারণ এ আবিষ্কার বাঙালির আত্মার আত্মীয় রবি ঠাকুরের সঙ্গে জড়িত।
টেগর রক (Tagore Rock)। প্রকৃতির অদ্ভুত উপহার ! কাঞ্চনজঙ্ঘাকে সান্দকফু অঞ্চল থেকে যে রকম শায়িত বুদ্ধের মতো লাগে, এও তেমন। ঠিক যেন রবীন্দ্রনাথের মুখ। রবীন্দ্রনাথ শুয়ে থাকলে তাঁর মুখাবয়ব যেমন লাগবে, অবিকল তাই। চোখ-মুখ-নাক থেকে লম্বা দাড়ি। যেন ভালবাসার জায়গায় চিরশায়িত গুরুদেব।
কার্শিয়াংয়ের সিটংয়ের কাছে অহলদাড়ায়। দার্জিলিং থেকে ৪৫ কিমি দূরে। পাথরের এই বিচিত্র গঠনে তৈরি হয়েছে কবিগুরুর শায়িত আদল।এখানকার হোম-স্টেগুলিতে বা আশপাশে ঘুরতে এলে এটিকে টুরিস্ট স্পট হিসেবে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন টুর গাইডরা।অহলদাঁড়ার ওই অঞ্চলকে ‘রবীন্দ্র পিক’ বলে পর্যটকদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। কেউ আবার বলেন টেগর রক।
জিটিএর ট্যুরিজমের তরফে জানানো হয়েছে, পাথরের এই বিচিত্র গঠন আচমকা এলাকা সম্পর্কে মানুষকে আগ্রহী করে তুলেছে। যারা সিটং আসছেন, তাঁরা ওই পাথর দেখতে যাচ্ছেন। শিলিগুড়ি থেকে খুব সহজেই যাওয়া যায়। কার্শিয়াং, দার্জিলিং, মংপু, কালিম্পং সব জায়গা থেকেই এক কথায় গাড়ি পৌঁছে দেবে আপনাকে।
জানা গিয়েছে, যে জায়গা থেকে পাথরের ওই বিচিত্র গঠনকে রবীন্দ্রনাথের মুখ বলে মনে হয় সেখানে একটি সেলফি জোন তৈরি করা যায় কি না সে ব্যাপারে জিটিএ একটি রিপোর্ট তৈরি করছে। জায়গাটা ‘ডায়রেক্টোরেট অব সিনকোনা অ্যান্ড আদার মেডিসিনাল প্লান্টস’-এর আওতায়। তাদের সঙ্গে কথা বলে পার্ক তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ এমন একটা আবিষ্কার, যা স্থানীয় অঞ্চলের অর্থনীতি পালটে দিতে পারে।
মজার বিষয় হল, দার্জিলিং পাহাড়ের যে জায়গায় বিশ্বকবি নিয়মিত যেতেন, সেই মংপু থেকে অহলদাঁড়ার এই ভিউ পয়েন্ট খুব কাছেই। মাত্র আধ ঘণ্টার পথ। কী বলবেন একে? কাকতালীয় নাকি প্রকৃতির বিস্ময়।