পদ্মার মাছের সব পেয়েছির আসর রয়েছে এ বাংলাতেই। মুর্শিদাবাদের লালগোলার মীনবাজার গেটা বাংলার মৎস্যপ্রেমীদের কাছে স্বপ্নের মতন। তাই এখানে এলে মাছ না নিয়ে কেউ নিজের এলাকায় ফিরেছে, এমন নজির প্রায় নেই।
লালগোলার নেতাজি মোড় থেকে জঙ্গিপুরে যাওয়ার রাজ্য সড়ক ধরে কয়েক মিটার এগোলেই বাঁদিকে লালগোলা মীন বাজার। এই মীন বাজারের সামনেই রাস্তার ধারে প্রতিদিন বিকেলে মাছের বাজার বসে।
স্টিলের থালা ও প্লেটে রাখা রয়েছে সদ্য পদ্মা ও স্থানীয় জলাশয় থেকে ধরা রকমারি মাছ। কি নেই এই মাছ বাজারে। পদ্মার ইলিশ থেকে রুই, কাতলা, কালবোস, মৃগেল, পার্সে, তোপসে, ভেটকি, মৌরলা, পিউলি, বাচা, ট্যাংরা, কাজলি, বাতাসি, বাটা, চিতল, ফলুই, বোয়াল, আর, রিঠে, কই, মাগুর, কুচো চিংড়ি, গলদা চিংড়ি, পুঁটি, তেলাপিয়া, খয়রা আরও কত নাম না জানা মাছ।
বিকেলের পড়ন্ত রোদে রুপালি আভা যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে মাছের। খাদ্য রসিক বাঙালি এত রকমারি মাছের সম্ভার দেখে নিজেকে সামলাতে পারে? স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে আসা পথ চলতি মানুষ ঢুঁ মারেন মাছ বাজারে।
তবে বর্ষায় পদ্মার ইলিশের খোঁজেই লালগোলা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ লালগোলা মাছ বাজারে আসেন। মালদা, নদীয়া সহ ভিন জেলা থেকে কাজের জন্য অনেকেই লালগোলায় আসেন। তাদের অনেকেই মাছ কিনে বাড়ি ফেরেন।
তবে লালগোলা মাছ বাজারের মাছ অভিনব পদ্ধতিতে বিক্রি করা। থালা বা প্লেটের মাছ মূলত ঠিকায় বিক্রি হয়। ক্রেতারা মাছ পছন্দ করেন। তারপর ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে দর কষাকষি চলে। দাম পোষালে ক্রেতা মাছ কিনে বাড়ি ফেরেন, তা না হলে খালি ব্যাগ হাতেই বাড়ি ফিরে যান।
এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিন বিকেলেই মাছ বাজার বসে। পদ্মা নদীর মাছ এখানে বিক্রি হয়। বিকেলে মাছ কিনতে বিকেল থেকে স্থানীয়দের পাশাপাশি জঙ্গিপুর, ওমরপুর, ভগবানগোলা, লালবাগ থেকে ক্রেতারা আসেন।
এই বাজারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ঠিকা দামে মাছ বিক্রি।তবে কেউ যদি ওজনে নিতে চান তাহলে ওজনে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, অন্য বাজারের তুলনায় দাম যে কম তা বলা যাবে না।
তবে এত তাজা ও রকমারি মাছের জন্য এখানকার মাছ বাজারের কদর রয়েছে। এখানকার অনেকেই মাছ কেনার জন্য বিকেলে বাড়ি থেকে বের হন না। বিকেলে কাজে বা বেড়াতে বেরিয়ে একবার মাছ বাজারে ঢুঁ মারেন। পছন্দ হলে সঙ্গে মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরেন।