১৯৬৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন মহম্মদ আজ়হারউদ্দিন। তাঁর কবজির মোচড় আজও ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত শট। এই শটেই তিনি বহু রান ভারতীয় ক্রিকেট দলকে উপহার দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক করার পর থেকেই গোটা দেশে মহম্মদ আজ়হারউদ্দিন বেশ পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন। ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ১১০ রান করেছিলেন। পরের দুটো ম্যাচেও তাঁর ব্যাট থেকে বেরিয়ে এসেছিল শতরান।
আজ়হার যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই ব্যাট করতেন। কোনও খারাপ বল পেলে সেটাকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে কোনও কসুর করতেন না। ১৯৮৯ সালে তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসাবে নির্বাচন করা হয়। যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গেই তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অধিনায়ক হিসাবে ১৭৪টি একদিনের ম্যাচের মধ্যে তিনি ৯০টি একদিনের ম্যাচে জয়লাভ করেছেন।
ব্যাট হাতেও আজ়হার ছিলেন যথেষ্ট সপ্রতিভ। ৯৯টি টেস্ট ম্যাচে তিনি ৬,২১৫ রান করেন। ব্যাটিং গড় ৪৫। আজ়হারের নামে একটি স্বতন্ত্র্য রেকর্ডও রয়েছে। তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের জার্সি গায়ে প্রথম এবং শেষ টেস্ট ম্যাচে শতরান করেন।
২০০৯ সালে মহম্মদ আজ়হারউদ্দিন কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে মোরাদাবাদ আসন থেকে জয়লাভ করার পর একই বছরে তাঁকে সাংসদ হিসাবে নির্বাচনও করা হয়।
১৯৮৬ সালে আজ়হারকে অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়। ১৯৮৮-তে পদ্মশ্রী। ১৯৯১ সালে তাঁকে উইশডেনের বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবেও নির্বাচন করা হয়েছিল।
২০০০ সালে সিবিআই ম্যাচ গড়াপেটার একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট অধিনায়ক হ্যান্সি ক্রোনিয়ের সঙ্গে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠে। এরপর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল একসঙ্গে আজ়হারের উপরে ক্রিকেট খেলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
মামলা গড়ায় অন্ধ্রপ্রদেশ উচ্চ আদালত পর্যন্ত। সেখানে প্রমাণের অভাবে আজ়হারের উপর থেকে আজীবন নির্বাসনের খাঁড়া তুলে নেওয়া হয়। আপাতত তিনি হায়দরাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতির পদে কাজ করে যাচ্ছেন।