সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের নজরে এসেছে এমন একটি রোগ যা পরবর্তী মহামারীর কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে! বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই রোগের জীবানুটি কোনও প্রাণির শরীর থেকে ছড়িয়ে পড়ছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই রোগটি ব্রাজিলের অ্যামাজন অরণ্যে বাসিন্দা কোনও বাদুড়, বানর এবং ইঁদুরের প্রজাতির মাধ্যমে দ্রুত ছবিয়ে পড়তে পারে। পরবর্তী মহামারী কী ভাবে এড়ানো যায়, বিজ্ঞানীরা এখন তা নিয়েই গবেষণা চালাচ্ছেন।
সম্প্রতি ব্রাজিলের অ্যামাজনাসের ম্যানৌস ফেডারেল ইউনিভার্সিটির (Federal University of Amazonas) জীববিজ্ঞানী মার্সেলো গর্ডো এবং তাঁর দল একটি কুলারের মধ্যে তিনটি পাইড তামারিন বানরের পচা-গলা দেহ দেখতে পান। বানরের পচা-গলা দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা।
প্রাণিবিজ্ঞানী আলেসান্দ্রা নাভা বানরের দেহ থেকে সংগৃহীত নমুনা থেকে এক ধরনের পরজীবী কীট, ভাইরাস এবং অন্যান্য সংক্রামক জীবানু আবিষ্কার করেন। বিজ্ঞানীদের দাবি, অ্যামাজন জঙ্গলে তাঁরা এমন একটি ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন যা সর্বকালের বৃহত্তম মহামারী সৃষ্টি করতে পারে।
এই পাইড তামারিন বানর অ্যামাজনের প্রায় সর্বোত্রই দেখা যায়। এই প্রজাতির বানরের শরীরে যে ভাইরাসটি পাওয়া গেছে, তা অত্যন্ত সংক্রামক! বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই ভাইরাসটির করোনার মহামারীর থেকেও আরও ভয়ঙ্কর মহামারি তৈরির ক্ষমতা রয়েছে।
আলেসান্দ্রা এবং তার দল অন্য যে ভাইরাস নিয়ে উদ্বিগ্ন সেটির নাম মায়ারো ভাইরাস (Mayaro virus)। এখন দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলিতে এই ভাইরাসটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এর সংক্রমণে জ্বর, সর্দি-কাশির মতো লক্ষণ দেখা যায়।
এই ভাইরাসের সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হ'ল, এর উপসর্গগুলি হল চিকুনগুনিয়া বা ডেঙ্গির মতো। তাই চিকিৎসকরাও মায়ারো ভাইরাস (Mayaro virus) আলাদা করে চিনতে পারছেন না।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, ব্রাজিলের মনাউসকে ঘিরে রয়েছে অ্যামাজনের অরণ্য। কয়েকশো কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এটি। ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ এই মানাউসে সববাস করেন। বিশ্বব্যাপী ১৪০০ প্রজাতির বাদুর মধ্যে মাত্র ১২ শতাংশ অ্যামাজন রেইন ফরেস্টে রয়েছে।
এগুলি ছাড়াও, অনেক প্রজাতির বানর এবং ইঁদুর রয়েছে যা ভাইরাস, প্যাথোজেন এবং ব্যাকটিরিয়া বা পরজীবীর বসবাসের নিরাপদ আশ্রয়। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এগুলি যে কোনও সময়ে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে মহামারী আকারে নিতে পারে!