শিলিগুড়ির ফুলবাড়ি ব্যারেজে আসা পাখিদের যাতে কোনওভাবে বিরক্ত না করা হয় সেজন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় আগেভাগে প্রস্তুতি শুরু করে দিলো পুলিশ, বনদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন।
শনিবার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অপটপিকের উদ্দ্যোগে ঘোষপুকুরের স্থানীয় পঞ্চায়েত, বনদপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসনদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন হয়।
চোরা শিকারিদের হাত থেকে বিদেশি পাখিদের বাঁচাতে আর্জি পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। অপ্টোপিক নামে একটি পাখি ও পরিবেশপ্রেমী সংস্থা যৌথ উদ্যোগ কাজ শুরু করে।
শীত আসলেই ওরা আসে এবং শীত পেরোলেই ওরা আবার নিজেদের দেখে ফিরে যায়। শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ির মহানন্দা ব্যারেজ যেন তাদের শীতের সময়ে পরিযায়ী পাখিদের ঠিকানা।
জানা গিয়েছে ডিসেম্বরের শুরু থেকেই সেখানে আসতে শুরু করে সুদুর আমেরিকা ও সাইবেরিয়া থেকে ইয়োলো ব্রেস্টেট বান্টিং, গ্রে হেডেড সোয়াম্পেনের মতো একাধিক প্রজাতির পরিযায়ী পাখি।
কিন্তু যতদিন দিন যাচ্ছে তত ফুলবাড়ি ব্যারেজে পরিযায়ী পাখির চোরাশিকার, নদীচর দখল হওয়ার ফলে তাদের আবাস্থল ও প্রজননস্থল ধ্বংস হওয়া এবং পিকনিকের কারণে পরিযায়ী পাখিদের আগমন কমার আশঙ্কা বাড়ছে।
তবে ইতিমধ্যে শীত পড়তেই আসা শুরু করেছে পরিযায়ী পাখিরা। তবে তাদের যাতে বিরক্ত না করা হয় তা নিয়ে আগিয়ে এলো অপ্টোপিক। তবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, পুলিশ এবং বনদপ্তরের তৎপরতায় ওই এলাকায় সম্পূর্ণরকমভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পিকনিকের আয়োজনে।
তা সত্বেও ওই এলাকার কিছু মানুষ নদীর ধরে থাকা গাছকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিযায়ী পাখির সেই আবাসস্থল। তবে যেহেতু পাখিরা আসা শুরু করেছে তাই আগে ভাগে প্রস্তুতি নিতে শুরু করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
এদিন শিলিগুড়ি সংলগ্ন ঘোষপুকুরের স্থানীয় পঞ্চায়েত, বনদপ্তর এবং পুলিশ প্রশাসনদের আধিকারীক দের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) অচিন্ত্য গুপ্ত, ফাসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অপ্টোপিক।
বৈঠকে মূলত স্থানীয় বাসিন্দাদের ওই এলাকায় প্রবেশের পাশাপাশি বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানানো হয়। এছাড়াও যাতে পরিযায়ী পাখির লোভে চোরাশিকারিদের রুখতে স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং সাধারণ মানুষের সহযোগিতার আবেদন করা হয়।
সংবাদমাধ্যমে মুখোমুখি হয়ে অপ্টোপিকের সভাপতি দীপজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, "শীত আসতে চলেছে। ইতিমধ্যে ধীরে ধীরে পরিযায়ী পাখিদের আগমন হতে শুরু করেছে। জায়গাটি সংরক্ষণ করে রাখায় ধীরে ধীরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বাড়ছে।
এইবারও যাতে পরিযায়ী পাখিরা এখানে এসে শান্তি মতো সময় কাটাতে পারে সেজন্য এলাকাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সেখানে নজরদারির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।" ডিএসপি অচিন্ত্য গুপ্ত বলেন, "ইতিমধ্যে ফুলবাড়ি ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকায় পিকনিকে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শীতের সময় ওই এলাকায় আমরা পুলিশি টহলদাড়ি ব্যবস্থা রাখছি। কোনোভাবেই যাতে পরিযায়ী পাখিদের শিকার বা কেউ বিরক্ত না করে সেদিকে নজর রাখা হবে।"