উত্তরবঙ্গে কৃষিতে গতি আনতে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে কীটনাশক ছড়ানোর শুরু করল কোচবিহারের উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (North Bengal Agriculture University)। ইতিমধ্যেই বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যেমে কৃষিকাজে কীটনাশক ছড়ানো সহ বেশকিছু কাজ নিয়ে গবেষণা চলছে। যদিও ভারতবর্ষে এখনও পর্যন্ত কৃষিকাজে এই ড্রোন প্রযুক্তি অতটা জনপ্রিয়তা লাভ করেনি। তাই দেশে এই প্রযুক্তিকে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু করে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সফলতাও পেয়েছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
যদিও বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়েই রেখেছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ড্রোন প্রযুক্তির এই গবেষণা সফল হলে গোটা দেশে কৃষিকাজে এক বিপ্লব আসবে বলেই মনে করছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইন্টারনেট যুগে লাঙ্গল, কাস্তে, ট্রাক্টর, পাম্পসেটের পাশাপাশি ড্রোন প্রযুক্তিও কৃষি ক্ষেত্রে জায়গা দখল করতে চলেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নতুন ড্রোন প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকরা।
প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক শ্যামল কুমার সাহু ও প্ল্যান্ট প্যাথলজিস্ট অধ্যাপক অয়ন রায় বলেন, অল্প খরচে খুব কম সময়ের মধ্যেই চাষের জমির বড়া অংশে কীটনাশক ছড়ানো যাচ্ছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে কীটনাশকও অনেক কম প্রয়োজন হচ্ছে।
সাধারণত এক একর চাষের জমিতে স্প্রে মেশিন দিয়ে কীটনাশক (Pesticides) ছড়াতে ২৫০ লিটার জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ড্রোনে মাত্র ৭ মিনিটে ৮ লিটার জল ব্যবহার করে সমপরিমাণ জমিতে কীটনাশক ছড়ানো যাচ্ছে।
এছাড়াও কৃষকরা স্প্রে মেশিনে কীটনাশক ব্যবহার করলে ত্বক এবং শরীরে অন্যান্য ক্ষতিরও আশঙ্কা থাকে। তবে ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যেমে সেই সমস্যাও নেই। এক দিনে ৭ জন কৃষকের কাজ ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যেমে করা সম্ভব।
ব্যাঙ্গালুরু থেকে এই ড্রোনটি আমদানি করেছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আপাতত ভারতেই তৈরি হচ্ছে এই প্রযুক্তির নির্দিষ্ট ড্রোনগুলি। ড্রোনগুলি (Drone) ব্যাটারির সাহায্যই আকাশে ভেসে থেকে একটানা নিজের কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
আপাতত ভারতে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারে ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়মবিধি রয়েছে। যদিও কৃষিকাজে তেমন কোনও বিধিনিষেধ নেই।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, একজন কৃষকের একার পক্ষে একটি ড্রোন কেনা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে ফার্মাস ক্লাব, কাস্টম হেয়ারিং সেন্টার ও কৃষকদের কোওপারেটিভগুলি তা সহজেই কিনতে পারে।