আফগানিস্তানে কুড়ি বছর পর আমেরিকা সেনা সরিয়ে নিয়েছে। পুরোপুরিভাবে এখন সে দেশে উগ্রপন্থী সংগঠন তালিবানের পূর্ণ অধিকার। তারা দখল করে রেখেছে গোটা আফগানিস্তান।
আমেরিকা সেনা নিয়ে নিজেদের দেশে চলে গেলেও আফগানিস্তানের কাবুলে কোটি কোটি টাকার হাতিয়ার এবং ফাইটার এয়ারক্রাফট রেখে গিয়েছে। যার ওপর এখন তালিবানদের সম্পূর্ণ দখল।
তালিবানদের কাছে ন্যাটোর বহুদেশের সেনার চেয়ে বেশি হাতিয়ার এবং ফাইটার বিমান রয়েছে। যা তাদের আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে। শেষ কিছু মাসে তালিবান জঙ্গিরা থেকে মাজার-ই-শরিফ পর্যন্ত ১০ টি এয়ারবেস নিজেদের দখল মজবুত করেছে তালিবানরা।
এখন লড়াইয়ে আমেরিকার ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চশির ঘাঁটিতে তালিবান লড়াইয়ের সময় ৬ মিলিয়ন ডলারের বেশি দামের এই ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে।
উপর থেকে গুলি চালাতে এই হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছে। তারা ডেইলি মেইল এর রিপোর্ট অনুযায়ী তালিবান নেতারা নিজেদের সৈনিকদের আফগান বায়ুসেনা ঐ সমস্ত পাইলটদের ধরে আনার নির্দেশ দিয়েছে।
যাদের আমেরিকা ঐ সমস্ত বিমান এবং হেলিকপ্টার চালাতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করে খোঁজা হচ্ছে। যুদ্ধবিমান এবং হেলিকপ্টারে প্রশিক্ষিত পাইলট ছাড়া তালিবানদের পক্ষে সেগুলি ওড়ানো সম্ভব নয়। কিন্তু বেশ কিছু ভিডিও সামনে এসেছে। যেগুলোতে দেখা যাচ্ছে, তালিবানি জঙ্গিরা বেশ কিছু বিমান চালিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
মনে করা হচ্ছে, এদের মধ্যে আফগানিস্তানের এয়ারফোর্সের প্রশিক্ষিত পাইলট, এখন যারা তালিবানে যোগ দিয়েছেন তারা এই সমস্ত বিমান ও হেলিকপ্টার ওড়াচ্ছে। হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মঙ্গলবার তালিবান উগ্রপন্থীরা নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। এরপর জঙ্গিরা ১৪ মিলিয়ন ডলারের হারকিউলিস ট্রান্সপোর্ট এর ককপিটে উড়ছে বলে একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে। বলা হচ্ছে আমেরিকান, সেগুলিকে যান্ত্রিক ত্রুটি যুক্ত করে দিয়ে দেশ থেকে চলে গিয়েছে। যাতে সেগুলো ওড়ানো সম্ভব না হয়।
৩০ জুন আমেরিকা সরকারের এক অধিকারী রিপোর্ট অনুযায়ী আফগান বায়ুসেনা তালিবানের আফগানিস্তান দখলের আগে ১০৮ টি হেলিকপ্টার এবং ৫৮ টি বিমান সহ মোট ১৬৭ বিমান চলাচল করছিল। উজবেকিস্তানে সূত্রে পাওয়া একটি খবরে জানা গিয়েছে তালিবানের হাতে যাতে সমস্ত এয়ারক্রাফ্ট চলে না যায়, সেই উদ্দেশ্যে চব্বিশটি হেলিকপ্টারের সঙ্গে ৪৬ টি আফগান বিমান যাতে তালিবানদের যাতে চলে না যায় তাদের দেশে নিয়ে আসা হয়েছিল।
আমেরিকান সৈন্য মিশন এর কমান্ডার জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেছিলেন, আমেরিকান সৈনিকরা আফগানিস্তানে যে সমস্ত বিমান ছেড়ে যাচ্ছেন সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে। ছবিতে বিমান এবং হেলিকপ্টারের থেকে প্রোপেলার এবং বন্দুক সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে দেখানো হয়েছে। যেখানে অন্য বিমানে ফিউজ এবং চাকা সরিয়ে তাদের নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও আমেরিকার সৈনিকেরা যাওয়ার পরে তালিবানদের কাছে এতগুলি চালানোর মতো বিমান রয়েছে, যা তাদের ত্রিশটি ন্যাটোর সদস্য এর মধ্যে ১০ টির চেয়ে বেশি বায়ুসেনাশক্তি প্রদান করেছে। আলবেনিয়া, বসনিয়া, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া. লিথুয়ানিয়া, লুক্সেম্বোর্গ, মন্টেনেগ্রো, উত্তর ম্যাসিডোনিয়া এবং স্লোভেনিয়ার চেয়ে বেশি সামরিক শক্তি রয়েছে এখন তালিবানদের হাতে।