আগেই বলেছিলেন ম্যান মেড বন্যা। এবার কেন ম্যান মেড বলেছিলেন তার খতিয়ান এবং হিসেব বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপ্যায়। শনিবার তিনি হুগলির আরামবাগে দাঁড়িয়ে ডিভিসিকে দোষারোপ করলেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, না জানিয়ে জল ছাড়াটা ক্রাইম।
কি করে বন্যা হলো, বোঝালেন মমতা
তিনি বলেন, আপনাদের বুঝতে হবে যে এখানে বন্যা হল কী করে। ৩০ তারিখ যেদিন নির্বাচন ছিল, সেদিন ১২ টার সময় হঠাৎ না বলে ৪৯ হাজার কিউসেক পাঞ্চেত থেকে ও মাইথন থেকে জল ছাড়া হয়। ১ টার সময় ফের ১ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ল। আবারও সাড়ে ৮ টায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে ডিভিসি। অর্থাৎ ৩০ তারিখ জল ছাড়া হল প্রায় ৩ লক্ষ এবং মধ্যরাতে যখন মানুষ ঘুমোচ্ছে তখন এমন কাজ করে।
বছরে চারবার জল ছাড়লে মানুষ কীভাবে বাঁচবে !
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এনডিআরএফ নেমেছে। নবান্ন থেকে ২৪ x ৭ ঘণ্টা নজর রাখা হচ্ছে। তিনি আশ্বাস দেন, ফিরে গিয়ে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে মিটিং করব। আশা করি দ্রুত জল নেমে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ডিভিসির উচিত রাজ্যের সঙ্গে কথা বলা। ক্ষোভ কিন্তু বাড়ছে, সতর্ক করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বছরে ৪ বার করে জল ছাড়লে মানুষ বাঁচবে কীভাবে ? ঝাড়খণ্ডের বাঁধগুলো সংস্কার করা হোক।
ঝাড়খণ্ড-বিহারকে দোষারোপ
ঝাড়খণ্ড-বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফল ভুগতে হচ্ছে। ওরা ওদের ড্যামগুলো পরিষ্কার করছে না। ওরা ওদের ড্যামগুলো পরিষ্কার করলে আরও জল ধরে। এভাবে না জানিয়ে জল ছাড়ার তীব্র প্রতিবাদ করছি আমি।" মুখ্যমন্ত্রী যোগ করেন, "জল ছাড়ার জন্য বন্যা হচ্ছে, এটা ম্যান মেড ফ্লাড। বাঁকুড়া জেলা পুরো ডুবে গিয়েছে, বর্ধমান ভাসছে। ওই জল আসছে হাওড়া-হুগলিতে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মন্ত্রীদের কাজে লাগাচ্ছি। সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার বাঁকুড়ায় সুব্রত মুখোপাধ্যায় , শনিবার ও রবিবার মলয় ঘটক থাকছেন পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও গিয়েছেন। হুগলির দায়িত্ব ফিরহাদ হাকিম, বেচারাম মান্না। হাওড়া এবং হুগলির কিছুটা দেখবেন পুলক রায় এবং মেদিনীপুর দেখবেন মানস ভুঁইয়া বলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ।
পুজোর মুখে বিপন্ন কয়েক কোটি মানুষ
পুজোর মুখে প্লাবিত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। শনিবার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রী আকাশপথে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন। আকাশপথেই জলমগ্ন আরামবাগের বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করে কালিপুরে যান তিনি। এখানে জলে নেমে যান। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন, জানতে চান এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গেও।