ফ্যাটি লিভার রোগ এমন একটি রোগ, যার মধ্যে লিভারের কোশিকাতে অনেক বেশি ফ্যাট জমা হয়ে যায়। এই রোগের কারণে লিভার ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং একাধিক সমস্যা তৈরি হতে শুরু করে।
প্রত্যেক তিনজনের মধ্যে একজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। হাই কোলেস্টেরল, লেভেল টু ডায়াবেটিস, স্লিপ অ্যাপনিয়া, আন্ডার অ্যাক্টিভ থাইরয়েড, ফ্যাটি লিভার কারণ হতে পারে। ফ্যাটি লিভার দুরকমের হতে পারে।অ্যালকোহলিক এবং নন-আলকোহলিক।
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ সাইলেন্টভাবে মানুষের শরীরে আক্রমণ করে। এটি ততক্ষণ পর্যন্ত বোঝা যায় না, যতক্ষণ পর্যন্ত লিভার পুরোভাবে ড্যামেজ হয়ে যায়। মলের সঙ্গে রক্ত আসা এর শুরুর দিকে লক্ষণ এবং এটি দেখামাত্রাই চিকিৎসকেরা সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্ক করা উচিত।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিসিস কি?
লিভার শরীরের অত্যন্ত জরুরি অর্গান যা কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার কন্ট্রোল করে। বিষাক্ত পদার্থ ফিল্টার করে ডাইজেশনের সাহায্য করে এবং সংক্রমণ কন্ট্রোল করে। মদ খাওয়ার পর লিভারের কোশিকার ড্যামেজ হতে শুরু করে। যদিও লিভার নিজেই ধীরে ধীরে রিকভারি করতে শুরু করে। কিন্তু যদি খুব বেশি মাত্রায় মদ্যপান করা হয়, তাহলে তার ক্ষমতা কমতে থাকে এবং একসময় শেষ হয়ে যায়।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারের সংকেত
একটি মেডিক্যাল কলেজের মেডিকেল ডাইরেক্টর ডক্টর মনিকা ওয়াশারম্যান জানিয়েছেন যে অত্যধিক মদ্যপান করার পর শরীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশি পরিমাণে মদ পান করলে লিভার কন্ট্রোল করতে পারেনা এবং তারপরে লিভার থেকে রক্ত বের হতে থাকে এবং তাদের পেট ব্যথা শুরু হয়।
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের অন্য লক্ষণ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর অনুসারে, অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এর কিছু অন্য লক্ষণও থাকে। যা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।
যদি নিচের এই লক্ষণগুলির কোনোটিই আপনার নজরে পড়ে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আচমকা ওজন কমে যাওয়া
বারবার অসুস্থ হয়ে পড়া
খিদে না পাওয়া
চোখ এবং চামড়া হলুদ হয়ে যাওয়া
পেট এবং তলপেটে ব্যথা হওয়া, রক্ত বমি
মলের সঙ্গে রক্ত আসা
ডাইমেনশিয়া
অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থেকে কীভাবে বাঁচবেন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে যে কেউ লাইফ স্টাইলে বদল করে ফ্যাটি লিভার রোগ আটকাতে পারেন বা কম করতে পারেন। প্রত্যেকটি মানুষের লিভারেই কিছু মাত্রায় ফ্যাট থাকে যেটি লিভারকে রক্ষা করে। কিন্তু অতিরিক্ত ফ্যাট হয়ে গেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা তৈরি হতে পারে। আর তা হলেই বিপত্তি। প্রত্যেক মানুষের লিভারে কিছু মাত্র ফ্যাট থাকে কিন্তু সেটি যখন মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন সেটি লিভারের ওজন ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেড়ে যায়। যা সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এ কারণে এ থেকে বাঁচার জন্য প্রত্যেক সপ্তাহে ১৪ ইউনিটের বেশি মাত্রায় মদ না পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই মাত্রা অ্যালকোহলের ৩০ মিলিলিটার এর বেশি নয় বলে মনে করা হচ্ছে। মদের এইটুকু মাত্রাও আবার ৩ বা তার চেয়ে বেশি দিনের মধ্যে খেতে হবে। যদি আপনি বছরে অধিক মাত্রায় মদ পান করে থাকেন তাহলে এটি কম করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।