৪০০ বছরের পুরনো মন্দিরের দুঃসাহসিক ডাকাতি। রাজা বীর হাম্বীর দেওয়া পায়ের নুপুর সহ লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দুষ্কৃতীরা, এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ।
মল্লরাজার আমলের গয়না
বিষ্ণুপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড সাক্ষী গোপাল পাড়ায় মল্লরাজা বীর হাম্বীর এর আমলে তৈরি প্রাচীন সাক্ষী গোপাল মন্দিরের ভেতরে রয়েছে রাধামাধব এর মূর্তি। এই মূর্তিগুলি সাজানো ছিল সোনার অলংকার দিয়ে ঢাকা।
রাধার পায়ে ছিল তৎকালীন মল্ল রাজা বীর হাম্বীর দেওয়া নুপুর, মাধবের পায়ের তলায় ছিল সোনার তৈরি বাঁশি। মন্দিরের ভেতরে ছিল প্রণামি বাক্স, তবে এই সবকিছু রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা মন্দিরের গেটের তালা ভেঙে নিয়ে চম্পট দেয়।
বৃহস্পতিবার সকালে মন্দিরের সেবায়েতের নজরে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকাতে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা, খবর দেওয়া হয় বিষ্ণুপুর থানায় তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ।
সিসিটিভি লাগানোর আগেই ঘটনাগৌতম মহন্ত জানান, আমাদের এই মহন্ত পরিবারের প্রাচীন মন্দির থেকে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার সোনার গয়না এবং প্রণামী বাক্স রাতের অন্ধকারে আমাদের প্রত্যেকের ঘরে দরজা লক করে মন্দিরের ৮ থেকে ৯ টি তালা ভেঙে একদল দুষ্কৃতী চম্পট দেয়।
দুষ্কৃতীরা রাধা ও গোপালের মূর্তির ক্ষতি করেছে। মন্দির চত্বরে এই সপ্তাহে সিসিটিভি লাগানোর পরিকল্পনা ছিল আর তার আগেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে গেল।
মুষড়ে পড়েছেন স্থানীয়রাগোপাল চন্দ্র গুহ নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা মায়ের চুরির ঘটনা জানতেই চোখের জল আটকে রাখতে পারেননি। কাঁদতে কাঁদতে সে বলে আমি ছোটবেলা থেকেই মায়ের জন্য ফুল তুলি।
মা আমাকে বারংবার বিভিন্ন সময় স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন। আমাকে সাহস জুগিয়েছিলেন। আজকের সেই মায়ের জিনিস চুরি হয়ে গেল। চোরেদের কঠিনতম শাস্তি দাবি করছি ।
প্রায়ই চুরির ঘটনায় কঠিন শাস্তির দাবি
তবে মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরে এভাবে বারবার চুরির ঘটায় এলাকার মানুষ রীতিমতো এক প্রকার আতঙ্কে দিন গুনছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে মন্দির নগরীর নিরাপত্তা নিয়ে ।
দ্রুত এলাকায় বিশ্বাস ফেরাতে ও মানুষের মধ্যে ভগবানের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনতে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির দাবি উঠছে। সোনার চেয়েও ওই সমস্ত গয়নার চোরাই মার্কেটে অ্যান্টিক ভ্যালু কয়েকগুণ বেশি।