৩০০ বছরের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার। তাও উপর্যুপরি। করোনা এবার তাই বন্ধ বারুইপুরের রায়চৌধুরীদের ৩০০ বছরের পুরনো রথযাত্রা।
করোনা আবহের জন্য এ বছরও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার অন্যতম পুরানো ও সমৃদ্ধ রথ বারুইপুরের রায় চৌধুরীদের রথযাত্রা বন্ধ।
সরকারি বিধিনিষেধ মানতেই হবে। উপায় নেই। তা ছাড়া মানুষের সুরক্ষার স্বার্থ রয়েছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও এবারও জাঁকজমক মুলতুবি রাখা হচ্ছে।
বাড়ির মধ্যে নাট মন্দিরে শুধুমাত্র জগন্নাথ দেবের পুজো চলছে। ভক্তরা একেবারে আসছেন না, তা নয়, তবে তাঁরা বন্ধ দরজার বাইরে থেকে মাথছা ঠেকিয়ে চলে যাচ্ছেন।
প্রতি বছর যে ভাবে বারুইপুরের রায়চৌধুরীদের রথযাত্রায় মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায় সেটা গত বছরের মতো এ বছরও অনুপস্থিত ছিল।
তবে সকাল থেকে কিছু মানুষ আসছেন জগন্নাথ দেবের পুজো দেখতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, তাই ভগ্ন মনোরথে মাথা ঠেকাচ্ছেন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর থেকে পুনরায় ধুমধামের রথযাত্রা পালিত হবে বলে জানিয়েছেন রায়চৌধুরীদের বংশধররা।
খাঁ খাঁ মাঠের এক কোণে রথ দাঁড়িয়ে রয়েছে বহু বিবর্তনের সাক্ষী হিসেবে। তাতে সম্প্রতি রং করা হয়েছে। ঝাঁড়পোছ হয়েছে নিয়মমাফিক।
রাজবল্লভ চৌধুরীর হাত ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে জমিদারির পত্তন করেছিলেন রায়চৌধুরীরা। তা তখন ঘোর ব্রিটিশ সাম্রাজ্য।
সেই থেকেই বারো মাসে তেরো পার্বণ এই রায়চৌধুরী বাড়িতে পালিত হয়। দীর্ঘ তিনশো বছরের বেশি সময় ধরেই এখানে চলছে রথযাত্রা।
আর সেই রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে বসে রথের মেলা। জেলার বহু দুরদুরান্ত থেকে মানুষজন আসেন এই মেলায়। অনেকের বিশ্বাস এখানে যা চাওয়া হয় তা পাওয়া যায়।
টানা একমাস ধরে বারুইপুর রাসমাঠে অনুষ্ঠিত হয় রথের মেলা। কিন্তু করোনা আবহের কারণে গত বছর থেকে বন্ধ রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন এই রথ। ফলে হতাশ এতদ অঞ্চলের মানুষজন। রথযাত্রা না হলেও মেলা উপলক্ষ্যে দু চারটে দোকান বসেছে এবার রাসমাঠে।