নীল সাদা কাপড়ের সামিয়ানা, চারিদিকে আলোর রোশনাই সিপিএমের (CPIM) পার্টি অফিস। বুধবার সন্ধ্যায় যা দেখে চমকে উঠেছিলেন পথচলতি মানুষজনও। ঠিক তখন পার্টি অফিসের উল্টো দিকে এক বাড়িতে বেজে চলেছে হরিনাম সংকীর্তন। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর সদর ব্লকের কনকাবতীতে। সেখানেই সিপিএমের কনকাবতী লোকাল পার্টি অফিসে প্রায় ২ হাজার মানুষের সমাগমে আয়োজিত হল অষ্টপ্রহরের খাওয়াদাওয়া। আমন্ত্রিত তৃণমূলের (TMC) নেতাকর্মীরাও।
২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল কনকাবতী পার্টি অফিস। এই অফিসেই একসময় সিপিএম-এর সশস্ত্র বাহিনীর আস্তানা ছিল বলে অভিযোগ বিরোধীদের। রাতের অন্ধকারে পথচলতি মানুষজনকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগও উঠত এই পার্টি অফিসকে কেন্দ্র করে। সিপিআইএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাদের দাপট চলত এই অফিস থেকেই। ক্ষমতার পরিবর্তন হতেই রাতারাতি ফাঁকা হয়ে যায় পার্টি অফিসটি।
এবার সেই পার্টি অফিসেই রীতিমতো অষ্টপ্রহরের খাওয়াদাওয়া আয়োজন। সম্প্রতি রক্তদান শিবিরকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিসে উড়েছিল সিপিএমের পতাকা। সেই পতাকাও খুলে নেওয়া হয়েছে মোচ্ছবের জন্য। তবে দেওয়ালে এখনও সিপিআই প্রার্থী তরুণ ঘোষকে ভোট দেওয়ার আবেদন এবং মার্কসিয় পাঠ কেন্দ্র লেখা জ্বলজ্বল করছে। রয়েছে বিজেপির (BJP) প্রতীক আঁকাও।
আরও পড়ুন - সময় কম-বাজেটও কম? দেশের এই হিল-স্টেশনগুলি ঘুরে আসুন, কাছেই এয়ারপোর্ট
অফিস প্রাঙ্গণে নীল-সাদা কাপড়ের সামিয়ানা শুধু নয়, পার্টি অফিসের প্রতিটি ঘরই ব্যবহার হয়েছে এই কাজে। দোতালাতেও খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন হয়। পার্টি অফিসের উল্টোদিকে যে বাড়িতে এই অষ্টপ্রহর হরিনাম সংকীর্তনের আয়োজন হয়েছে, সেই বাড়ির সদস্য চঞ্চল বারিক জানান, "বাড়িতে জায়গা না থাকায় বন্ধ পড়ে থাকা সিপিএম-এর পার্টি অফিসে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।"
সেখানে আমন্ত্রিত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে স্থানীয় নেতাকর্মীরাও। বুধবার রাতে খাওয়াদাওয়ায় উপস্থিত ছিলেন বলে মানছেন কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বাবাই মাঝি। তিনি বলেন, গ্রামের সবার নিমন্ত্রণ ছিল। সেই হিসাবে যাওয়া হয়েছিল এবং সেখানে খাওয়া-দাওয়ার অনুষ্ঠানের জন্য সিপিএম-এর সমস্ত পতাকা আগে থেকেই খুলে নেওয়া হয়েছিল।
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া ব্রিগেডের এক নেতা বলেন, সিপিএম-এ আর লোকজন নেই, তাই সংগঠনের খরচ চালাতে পার্টি অফিস ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।