দূর থেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে সন্ত মনে হতে পারে। কিংবা সংসারত্যাগী কোনও শক্তিশালী যুবা। পরণে গেরুয়া, হাতে কমণ্ডলু। তবে কাছে না যাওয়াই ভাল। এহেন আপাত নিরীহ রামভক্তের তাণ্ডবে দিনভর নাকাল হতে হল আলিপুরদুয়ার শহরবাসীকে।
শহরের চৌপথি এলাকায় মাঝ রাস্তায় আচমকা বসে পড়েন ওই গেরুয়াধারী। রাস্তার মাঝে জমিয়ে বসেছেন এমন যেন ঠেকের আমোদ। হাতে গাঁজার কলকে। তাতে মাঝে মধ্যে সুখটান দিচ্ছেন। আর কণ্ঠ ছেড়ে হাঁক পাড়ছেন জয় শ্রীরাম।
মাঝ রাস্তায় বসে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই যানজট তৈরি হয়েছে মাঝে মধ্যেই। পথচারীদের কটুক্তি, গালিগালাজ গায়ে মাখেননি তিনি। দিব্য আমোদে জাঁকিয়ে বসেছেন।
ট্রাফিক পুলিশও দু-একবার ওঠাতে গিয়ে বাবার রোষানলে পড়েছেন। ফলে দিনভর রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডিউটে করে বাড়তি কানের সুখ আর চাননি তাঁরা। ফলে রণে ভঙ্গ দিয়েছেন।
পুলিশকেও কড়কে দিয়ে সাহস আরও বেড়ে গিয়েছে বাবাজীবনের। ফলে গাঁজায় দম বেড়েছে কয়েক ছিলিম। ভাবখানা এমন যেন, "ত্রিভুবন ফিরিছে আমারি পিছুতে।"
শুক্রবার দুপুর একটা নাগাদ ওই আগন্তুক সন্ন্যাসীবেশী ব্যক্তি প্রথমে শহরের প্রানকেন্দ্র চৌপথি এলাকায় রাস্তার মাঝখানে বসে পড়ে ৷ দীর্ঘক্ষণ তাকে হঠাতে না পেরে শহরে ব্যপক যানজট তৈরি হয়।
এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলে ওই এলাকায় গাঁজাখোরের তাণ্ডব। শেষমেষ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশের তরফে দমকল ডাকারও ভাবনা-চিন্তা করা হয়। তবে তার আগেই এলাকা ছাড়েন তিনি।
তবে এলাকা ছাড়লেও শহর ছাড়েননি এত সহজে। এরপর গেরুয়া পোশাকের ওই ব্যাক্তি বক্সা ফিডার রোড ধরে চলে আসে ঢাকেশ্বরী মোড়ে। সেখানে দুটো নাগাদ ফের বক্সা ফিডার রোডে ঢাকেশ্বরী মোড়ের রাস্তার মাঝখানে বসে পড়ে।
শুরু হয় নতুন করে উৎপাত। দ্রুত গতিতে চলতে থাকা শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় আচমকামাই থমকে যায় শহর। ফের রাস্তার মাঝে বসে তান্ডব শুরু করে ওই ব্যক্তি। বেশ কিছু দ্রুত গতির গাড়ি গেরুয়া পোশাকের ওই ব্যক্তিকে পাশ কাটিয়ে যাবার চেষ্টা করলে চলন্ত গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ে গাড়ি আটকে দেন গেরুয়াধারী।
পথ চলতি মানুষ ওই ব্যক্তির কান্ডকারখানা দেখে রাস্তার ধারে থমকে দাঁড়ায়। অনেকেই ওই গেরুয়া পোশাক পরিহিত ওই ব্যক্তির কার্যকলাপ ক্যামেরাবন্দী করে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করেন। প্রায় দুঘন্টা রঙ্গ তামাশা চলার পর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা এসে ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে নিয়ে যায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন আম জনতা। তবে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।