জম্মু–কাশ্মীর ও লাদাখের অধিকাংশ অঞ্চলেই রাতের তাপমাত্রা ক্রমাগত নীচের দিকে নামতে শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তুষারপাত হওয়ায় শীত জাঁকিয়ে পড়েছে এখানে।
উত্তর কাশ্মীরে তুষারে আবৃত পাহাড়ে তাপমাত্রা নেমেছে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর মধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা LOC-তে দায়িত্বে অবিচল ভারতীয় সেনা।
শীতের মরসুমে মাইনাস ২০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায় এখানকার তাপমাত্রা। প্রতি বছরই শীত আসার আগে তার জন্য প্রস্তুতি চলে সেনাবাহিনীতে।
শীতের সময় বরফে ঢাকা সীমান্তের বেশ কয়েকটি এলাকায় টহল দেওয়াও কষ্টসাধ্য।
তীব্র ঠাণ্ডায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে হয়তো এক পর্যায়ে হাতের আঙুলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে অকেজো হয়ে যায়।
শেভ করা, বাথরুমে যাওয়া কিংবা দাঁত ব্রাশ করা সাংঘাতিক কঠিন কাজ এই কনকনে ঠান্ডায়।
এই ঠান্ডায় রান্নাবান্না করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। প্রায় সারাদিনই লেগে যায় খাবার রান্না করতে। শুধু ভাত এবং ডাল রান্না করতেই চার ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগে।
এই ঠান্ডার সঙ্গে যুঝতে তাই সঙ্গে একটি ব্যাগ রাখতে হয় জওয়ানদের। যাতে প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে থাকে স্লিপিং ব্যাগ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, কেরোসিন তেল, বরফ কাটার যন্ত্র, হাত ও পায়ের মোজা ইত্যাদি। পুরো ব্যাগের ওজন প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কেজি।
সেনার দাবি, শীতের আগে কাশ্মীর উপত্যকায় জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দিতেই হামলা চালায় পাক ফৌজ। তাই কনকনে ঠান্ডাতেও সজাগ থাকতে হয় বাহিনীকে।
১৯৯৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কার্গিল যুদ্ধ যখন হয়েছিল ৩,৩২৫ মিটার উচ্চতার এই এলাকায় তখন তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি নেমে গিয়েছিল।
বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেনে এত ঠাণ্ডা পড়ে যে, তরল জুস ইটের মতো শক্ত হয়ে যায়। এমনকি টমেটো ও ডিমও জমে যায়। সেখানে মোতায়েন জওয়ানদের হাতুড়ি মেরে ডিম ফাটাতে হয়।
এদিকে এবার লালফৌজের চোখ রাঙানির মাঝেও লাদাখের চরম ঠাণ্ডার সঙ্গে যুঝতে গত সেপ্টেম্বর থেকেই পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা।
বর্তমানে লাদাখের একাধিক এলাকায় তাপমাত্র প্রায় - ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গিয়েছে।