করোনা আবহে ধসে গিয়েছে জনজীবন। বাড়িতে বসে মানসিক অবসাদে বাড়ছে। সে সময় ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে দুদণ্ড শান্তি চাইলে তখন হিমের পরশ গায়ে মাখতে পাইনের জঙ্গলে হারিয়ে এনার্জি ফিরিয়ে আনতে পারেন। স্বপ্নের দেশটি খুব একটা বেশি দূরেও নয়। হাতের কাছেই লামাহাটা।
মুখ্যমন্ত্রীর কল্যাণে রাজ্য পর্যটন মানচিত্রে এখন মোটামুটি পরিচিত ডেস্টিনেশন লামাহাটা। তবে খুব যে ভিড় হয় তা নয়। নিরিবিলি সময় কাটানোর অত্যন্ত ভাল সুযোগ।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে লামাহাটার উচ্চতা ৫ হাজার ৭০০ ফুট। দার্জিলিংও তাই। তবু দার্জিলিংয়ের ঘিঞ্জিভাব এখানে নেই। দার্জিলিং ও কালিম্পং থেকে মোটামুটি একই দূরত্ব।
দুর্গম পাহাড়ি এলাকা। জনবসতি খুব কম। গরমে বেড়াতে যাওয়ার কথা উঠলেই দীপুদা বা দীঘা-পুরী-দার্জিলিংয়ের বাইরের যে জগত, তাতে লামাহাটা অত্যন্ত ফিট।
শিলিগুড়ি থেকে ভাড়া গাড়িতে অথবা শেয়ার জিপে দার্জিলিংয়ের পথে জোর বাংলোয় নেমে পড়লেই হবে। আড়াই ঘন্টার পথ। ওখান থেকে আবার ভাড়া গাড়ি অথবা শেয়ার জিপে চললে সোজা লামাহাটা।
পাইনের জঙ্গল। সেখানেই লুকিয়ে ছোট্ট পাহাড়ি জনপদ লামাহাটা। সবুজে ভরা অন্য ভুবন। যেখানে প্রকৃতি কথা বলে। প্রতি মূহূর্তে রং বদলায়। কোলাহলমুক্ত হিমেল পরিবেশ আপনার মনের গভীরে সুপ্ত আবেগ সতেজ করে তুলবেই।
মন চাইবে প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে পাহাড়ের গায়ে ওড়নার মতো জড়িয়ে থাকা চা বাগানে পা বাড়াতে। চলার পথে রকমারি পাহাড়ি ফুল পেয়ে যাবেন। কানে আসবে নাম না জানা হরেক রকম পাখির কলতান। সবদিক থেকেই প্রকৃতি নিজেকে উজার করেছে লামাহাটায়।
লামাহাটা মূলত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বসতি এলাকা। রয়েছে মনেস্ট্রি। ধর্মীয় রীতি মেনে নানা রংয়ের পতাকায় সাজানো পথঘাট। হিমেল হাওয়ায় দিনরাত পত-পত করে উড়ছে পতাকা।
দার্জিলিং পাহাড়ের অন্য কোথাও এত পাইন গাছ পাবেন না। রয়েছে ধূপি গাছও। সেখানেই ডানা ঝাপটায় হরেক রকম পাখি। পাহাড়ি গাছের চিকন পাতা চুইয়ে পড়া হিমের টুপটাপ শব্দ, দিনভর রোদ কুয়াশার লুকোচুরি বন্ধ মন মনের দুয়ার খুলে দেবে। ল্যান্ডস্কেপের ফোটগ্রাফির নেশা থাকলে তো কথাই নেই।