জঙ্গলের কর্দমাক্ত নোংরা জায়গায় জন্ম কিংবা পুরনো গাছের গোড়ায় শান্ত নিজেদের মধ্যেই মেতে থাকা এই ফাঙ্গি অর্গানিস্মস এ দুনিয়া আলাদা।আমরা মাশরুমের কথা বলছি। কিন্তু বিজ্ঞানীদের দাবি যে মাশরুম নিজেদের মধ্যে কথা বলে।
তারা কথা বলেন, খবর আদান প্রদান করেন এবং তাদের কাছে তাদের ডিকশনারিতে ৫০ টি শব্দ রয়েছে। ইলেকট্রিক ইমপালস বিদ্যুৎ প্রবাহের মতন চলে। গবেষণা করার পর জানা গিয়েছে, নিজেদের মধ্যে কথা বলা, আলোচনায় মাস্টার তারা। সংবাদ আদান-প্রদান করার বিষয়ে চ্যাম্পিয়ানও বটে।
এদের কাছ থেকে বের হওয়া বিদ্যুৎ প্রবাহ মানুষের কথাবার্তা বলার মতই হয়। যদি তাদের আলাদা আলাদা ইলেকট্রিক্যাল ইম্পালসকে শব্দে বদলে দেওয়া যায়। তাহলে মাশরুম প্রায় ৫০ টি শব্দে ব্যবহার করে যাতে নিজের মধ্যে কথাবার্তা বলে।
মাশরুম মাটির ভেতরে মজুত থাকা নিজেদের গোড়ায় অর্থাৎ লম্বা ফিলামেন্টের মত বস্তুটিকে হাইফে বলে। তার মাধ্যমে তারা বিদ্যুৎপ্রবাহ পাঠায়। এই বিদ্যুতের তরঙ্গের মধ্যে দিয়ে খবর থাকে, যা অন্যরা বুঝে যান। ঠিক সেই রকমই, যেমন মানুষের শরীরের নার্ভ সেল উপলব্ধি করে।
এখন আপনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইলেকট্রিক ইমপালসের সঙ্গে মানুষের ভাষার আদান-প্রদানের কী সম্পর্ক? সেগুলি শব্দে কীভাবে বদলে যায়? এর গবেষণা করতে গিয়ে ব্রিস্টলের ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্ট অফ ইংল্যান্ড এ থাকা কম্পিউটার ল্যাব এ প্রফেসর অ্যান্ড্রিউ এটি প্রয়োগ করেছেন। ফাংগাসের ৪টি প্রজাতি এনোকি, স্প্লিট গিল, ঘোস্ট এবং ক্যাটারপিলার। ফাঙ্গি থেকে বের হওয়া বৈদ্যুতিক তরঙ্গের এনালাইসিস করেছে।
প্রফেসর অ্যান্ড্রু উইফে জলের মধ্যে খুব সুক্ষ মাইক্রো ইলেকট্রোড লাগিয়ে দিয়েছেন। এই মাইক্রোইলেকট্রনিক্স হাইফে মারিয়া নামের সঙ্গে লাগানো হয়েছিল। তখন জানা গিয়েছে মাশরুম এবং নিজেদের মধ্যে কারেন্ট এর মাধ্যমে তরঙ্গের মাধ্যমে খবর আদান প্রদান করে। আলাদা আলাদা পরিস্থিতিতে আলাদা আলাদা ভাবে তারা তরঙ্গ প্রবাহ করে। কম সময়, বেশি সময়ের হালকা অথবা তীব্র পার্থক্য দেখা যায়।
জানা গিয়েছে যে, আলাদা আলাদা ফাঙ্গাস নিজেদের ক্লাস, ফ্যামিলি এবং প্রজাতি অনুসারে বিদ্যুতের তরঙ্গ প্রবাহ করে। রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স প্রকাশিত হয়েছে, প্রতিটি কারেন্টের আলাদা তীব্রতা এবং সময়সীমা ছিল। তারা যখন ডিকশনারিতে মজুত শব্দের উচ্চারণের সঙ্গে এনএসএস করেন তখন ৫০ টি শব্দ বেরিয়ে আসে। যা মানুষের কথাবার্তার সঙ্গে মিলে যায়।
কোনও সিম কার্ড ভেজা কোনও জায়গায়, স্যাঁতস্যাঁতে এলাকাতে, স্পিড গ্রিলসের শরীর তরঙ্গায়িত হয়। তাদের কথাবার্তায় সবচেয়ে বেশি জটিল বলে মনে করা হয়। তাদের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাক্টিভিটি তাদের একতা দশায় একসঙ্গে আওয়াজ করতে থাকে। অন্য মাশরুমরাও কথাবার্তা বলে কিন্তু তাদের সংবাদ এতটা জটিল নয়।
প্রফেশ্বর অ্যান্ড্রিউ জানিয়েছেন, যে তারা একদম কথা বলে না। এরকম হতে পারে। কারণ মাশরুম এমআইসিআর অংশ ইলেকট্রিক্যাল চার্জ থাকে। যখনই চার্জওয়ালা মাশরুম আলাদা আলাদা ইলেকট্রন এর সামনে আসে, তখন একটি প্রবাহ তৈরি হয় এই প্রবাহ পুরো মাশরুমের কলোনিকে ওয়েভ এর মাধ্যমে মুছে দেয়।
এমন হয়েছে যে বদলে যাওয়া পরিস্থিতিতে তার মধ্যে কোনও সংবাদ থাকে না। এখন এই বিষয়ে বেশ কিছু স্টাডি করার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ ইলেকট্রিক্যাল খবর কোনও ভাষায় বদলানোর জন্য আরও প্রমাণের প্রয়োজন।
ইউনিভার্সিটি অফ এক্সট্রা রে বায়োসাইন্স এস এর প্রফেসর বিভাগ জানিয়েছে নতুন স্টাডিতে দেখা গিয়েছে যে মাশরুমের মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল বার্তা দলবদ্ধ ভাবে চলে। এর আগে এরকম ফ্রিকুয়েন্সি প্রসঙ্গ এর খবর পাওয়া যায়নি। অত্যন্ত ভালো স্টাডি এটি। কোনও বিদ্যুৎ প্রবাহের শব্দের মধ্যে মিশিয়ে তা ভাষা দেওয়া কঠিন কাজ। যদি কোনও কেউ এটা করতে পারে, তাহলে হয়তো মাশরুমের গুগল ট্রান্সলেট দেওয়া যেতে পারে। এই খবর দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।