প্লাবিত ঘাটালেএবার তর্পনের জন্য যেতে হলনা শীলাবতিতে, বাড়ির সমানের প্লাবনেই তর্পন,নৌকাতেই মহালয়া,দাসপুরে কোমর জলে ডুবে রয়েছে বহু মন্ডপ।
বন্যায় ভাসছে ঘাটালের বিস্তৃর্ণ এলাকা। তার মাঝেই মহালয়ার ভোরে রেডিওতে মহালয়া শুনতে ব্যস্ত ঘাটালের বানভাসি মানুষ। বিদ্যুৎ নেই, টিভির কেবল লাইন বন্ধ, মহালয়া দেখার উপায় নেই। ভরসা করতে হচ্ছে তাই রেডিওর ওপরই। নৌকায় বসেই রেডি র নব ঘুরিয়ে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের চেনা কন্ঠে মহালয়া শুনেছেন বানভাসি ঘাটালের লোকজন।
মহালয়ার দিনেও নৌকার ওপরে বসে রেডিও শুনতে শুনতে অনুপ সামন্ত বলেন- এবার পুজোটা এসেছে বলে মন হচ্ছে না ৷ কেউই পুজো নিয়ে তেমন ভাবছেন না ৷ মানুষের এখন খেতে পাওয়া নিয়েই চিন্তা ৷ পুজো উৎসব এখানে যেনো বিলাসিতা সকলের কাছে ৷ কারণ তিনমাস সকলেই জলবন্দি হয়ে রয়েছেন ৷
বন্যার সৌজন্যে দুয়ারে বন্যা, বাড়ির উঠানে এসেছে গঙ্গা তাই বাড়ির সামনে চলছে পিতৃ তর্পণ। এই ছবি প্রমাণ করছে ঘাটালের গোটা চিত্র। বন্যার কারণে তর্পণের ছবিটা পাল্টেছে ঘাটালে।
অন্যান্য বছর ঘাটালের শিলাবতী নদীতে তর্পণ করতে যেতে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। এবছর পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। বন্যার জলে প্লাবিত ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। তাই বন্যার কারণে বাড়ির সামনেই বন্যার জলে দাঁড়িয়ে চলল পিতৃ তর্পণ।
পশ্চিম মেদিনীপুর দাসপুর থানার হোসেনপুর এলাকাতে বহু পুরনো প্রচলিত সার্বজনীন দুর্গোৎসব এবার জলে ডুবে। চতুর্থবারের প্লাবন পরিস্থিতিতে অর্ধনির্মিত পুজো মন্ডপে এখনো কোমর সমান জলের তলায়। উদ্যোক্তারা হতাশ। প্লাবিত এলাকার মানুষের মনে কিছুটা হলেও পুজোর আনন্দ দিতে জলে ভাসমান অবস্থায় স্থান দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে প্রতিমা ও পূজার সামগ্রীকে। প্রয়োজনে প্রতিমাকে ভেলাতে হলেও ভাসিয়ে পুজোর আয়োজন করা হবে বলে জানাচ্ছে পুজো কমিটিরগুলি ৷
প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকটের কারণে সেভাবে আর্থিক সাহায্য জোটেনি পুজোর আয়োজন করতে। তবে উদ্যোক্তারা নিজেরা যতটুকু পেরেছেন তারপরে প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন আর্থিক সাহায্যের জন্য। ঘাটাল মহকুমাতে বুধবার পর্যন্ত ১৫৭ টা পুজোর উদ্যোক্তা আবেদন করেছেন পুজোর অনুমতি চেয়ে ৷ যা গতবারে আরও একটু বেশি ছিল ৷ এবার এই আবেদনকারিদের বেশিরভাগই কোনোভাবে পুজোটুকু ছুঁয়ে যাবেন ৷ বড়ো আয়োজন তেমন হচ্ছেনা ঘাটাল মহকুমাতে এবার ৷