মদ্যপায়ীদের জন্য খারাপ খবর। নতুন এক গবেষণায় সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ক্যান্সার ও মদের সঙ্গে সম্পর্ক দেখাতে গিয়ে গবেষকদের দাবি, মদ খাওয়ার ফলে ২০২০ সালে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। আমেরিকায় এই ধরনের ঘটনা সবথেকে বেশি সামনে এসেছে।
lancet archaeology-র ১৩ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে ক্যান্সারের যে ঘটনাগুলি সামনে এসেছে, তার মধ্যে ৪ শতাংশ শুধু মদ খাওয়ার জন্য। যাঁরা দিনে একাধিকবার মদ্যপান করেন, তাঁরা ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
নর্থ ওয়েস্টার্ন মেডিসিনের সার্জেন চিকিৎসক ডেভিড অওডল জানিয়েছেন, অ্যালকোহল আসলে উত্তেজন পানীয়। আর সেই কারণে এটি আমাদের গলা, পেট ও মুখের ক্ষতি করতে পারে। আর কোনও কোনও সময় এই অ্যালকোহলই মানুষকে ক্যান্সারে আক্রান্ত করে।
মদের কারণে যাঁরা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্য়ে ৭৫ শতাংশ পুরুষ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার দেখা দিয়েছে গলা, পেট ও মুখে। অন্যদিকে অত্যাধিক মদ্যপানের ফলে মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রবণতা বেড়েছে।
মদ্যপানের কারণে ক্যান্সার হওয়ার পিছনে অন্যতম এক কারণ হল করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউন। অনেকের মতে, এই সময় বাড়িতে থাকার ফলে পুরুষরা বেশি মদ্যপান করছেন। গতবার আমেরিকার অনেকেই লকডাউন পরিস্থিতিতে মদ্যপান বাড়িয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন।
আবার চিকিৎসকরা এও বলছেন, লকডাউনের সময় অনেকেই মদ খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, লকডাউন কেটে যাওয়ার পরও সেই অভ্যেস থেকে তাঁরা বেরিয়ে আসতে পারেননি।
যদিও আশার কথাও রয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনা মহামারীতে মদ্যপান বেশি করা ও ক্যান্সারকে তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার তারা এখনই পক্ষপাতি নন। কম করে ১০ বছর না গেলে এই নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসা উচিত হবে না।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, সাধারণভাবে অনেকে মনে করেন, সবথেকে বেশি ক্যান্সারের কেস সামনে আসে ধূমপান করার কারণে। কিন্তু, এই তথ্য ভুল। বরং, স্কিন ক্যান্সার অনেক বেশি হয়। আমেরিকাতেই প্রতিবার ৪ লাখেরও বেশি মানুষ স্কিন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত অর্ধেকের বেশি মানুষের ক্যান্সার থেকে মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, তারপরও অনেকে মারা যান। কারণ, অর্থনৈতিক অবস্থা। কম উন্নত দেশগুলির ক্যান্সার রোগীদের মৃত্যুর হার সবথেকে বেশি।